ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলায় কেঁপে উঠছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। পুরো গাজা যেন ধ্বংসের জনপদে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৬৪ হাজার মানুষ।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ গতকাল মঙ্গলবার জানায়, গাজায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ৯৩৪ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এক হাজারের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫৬০টি বাড়ি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেখানে আর বসবাস করার উপায় নেই। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ওসিএইচএ।
সংস্থাটির হিসাবে, বাস্তুচ্যুত প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ মানুষ গাজায় জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়শিবিরে উঠেছেন। সেখানকার ৮৮টি বিদ্যালয়ে এসব শিবির খোলা হয়েছে। ৭৪ হাজারের মতো মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে উপাসনালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত গত শনিবার।
ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ওই দিন নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় হামাস। মাত্র ২০ মিনিটে ৫ হাজারের মতো রকেট ছুড়ে নিজেদের শক্তির জানান দেয় সংগঠনটি। ভেদ করে ইসরায়েলের নিশ্ছিদ্র সুরক্ষাবলয়।
শুধু তা–ই নয়, সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে পড়েন হামাসের যোদ্ধারা। শুরুতে হতবাক হলেও দ্রুত পাল্টা জবাব দেয় ইসরায়েল। পাল্টা আক্রমণ করে গাজা উপত্যকায়। এর পর থেকে ফিলিস্তিনে মুহুর্মুহু বোমা পড়ছে।
পাঁচ দিন ধরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় অসংখ্য ভবন ধসে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাবারের চরম সংকট। অনেক জায়গায় নেই বিদ্যুৎ। সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন গাজাবাসী।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গাজায় দুই শতাধিক জায়গায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলের মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২০০।