যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চেয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডান। চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের প্রভাব জর্ডান সীমান্তেও পড়তে পারে। এমন আশঙ্কায় সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে এ উদ্যোগ নিয়েছে জর্ডান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জর্ডান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুস্তফা হিয়ারি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে চাই। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্ষেপণাস্ত্রপ্রতিরোধী প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চেয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি হলো প্যাট্রিয়ট। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর ২০১৩ সালে জর্ডানে প্যাট্রিয়ট স্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। গৃহযুদ্ধ আশপাশের দেশে ছড়িয়ে পড়বে, এমন আশঙ্কায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। এর জেরে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির এমন পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে জর্ডান।
সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হওয়ায় পশ্চিমা নেতাদের কড়া সমালোচনা করেছেন জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমা নেতারা ‘প্রকট দ্বিচারিতা’ করেছেন।
তিনি আরও বলেছেন, যখন ৭ অক্টোবর হামলার ঘটনা ঘটল, তখন পশ্চিমা বিশ্ব তাৎক্ষণিক ও দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েল ও তার আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে দাঁড়াল। তারা হামলার নিন্দা জানাল। কিন্তু তাঁরা গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে বিশ্বে নীরবতা দেখছেন।
গাজায় হামলা চালাতে ইসরায়েলি বাহিনীকে অস্ত্র-গোলাবারুদ দিচ্ছে পেন্টাগন। আর জর্ডানের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করে এসব সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে, তা সঠিক নয় বলেও দাবি করেছেন জর্ডানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র।
তবে পশ্চিমা কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে জর্ডানের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনা ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক তৎপরতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে পেন্টাগন এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।
প্যাট্রিয়ট হলো ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা। প্রাথমিকভাবে অনেক উঁচুতে থাকা উড়োজাহাজ প্রতিহত করতে এই ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল।
গত শতকের আশির দশকে কৌশলগত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলার বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে এই ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হয়। প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাকের ব্যবহৃত রুশ স্কাড ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। সেটাই ছিল প্রথম কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে এই ব্যবস্থার ব্যবহার।