ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান

ইসরায়েলকে ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের’ জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল ইরান

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রকমের পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল যদি তেহরানের স্বার্থবিরোধী কাজ করে, তবে ইরান এর তাৎক্ষণিক ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের জবাব দেবে।

এনবিসি নিউজকে গতকাল শুক্রবার দোভাষীর মাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির এ হুঁশিয়ারি দেন।

হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেন, ‘ইসরায়েল যদি আরেকবার দুঃসাহসিকতা দেখায় ও ইরানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে, তবে আমাদের পরবর্তী সাড়া হবে তাৎক্ষণিক ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের।’

গতকাল ইরানে ইসরায়েলের হামলা চালানোর খবরের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের মন্ত্রী এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের আগে গত বুধবার ইরানের সেনাপ্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল আব্দোলরহিম মৌসাভি বলেছেন, ইরানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে কঠোরভাবে তার জবাব দেওয়া হবে। এই জবাব এমন হবে যে তাদের অনুতাপ করতে হবে।

এদিকে তেহরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনার খবরে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের আগে গত বুধবার ইরানের সেনাপ্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল আব্দোলরহিম মৌসাভি বলেছেন, ইরানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে কঠোরভাবে তার জবাব দেওয়া হবে। এই জবাব এমন হবে যে তাদের অনুতাপ করতে হবে।

১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। তাতে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এ হামলার বদলা হিসেবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একযোগে ১৭০টি ড্রোন, ১২০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান।

এক অনুষ্ঠানে ক্ষেপণাস্ত্রের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা আশতিয়ানি। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, তেহরান

ইসরায়েলি বাহিনীর ভাষ্যমতে, সেসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই আকাশে থাকতে ধ্বংস করা হয়েছে। আগে থেকে ওই অঞ্চলে অবস্থান নিয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড এ হামলা রুখতে বড় ভূমিকা রাখে। সিরিয়ায় আগে থেকে অবস্থানরত যুক্তরাজ্যের জঙ্গি বিমানগুলোও এতে অংশ নেয়। এ হামলা প্রতিহত করতে সেখানে আরও যুদ্ধবিমান পাঠায় যুক্তরাজ্যের রয়েল এয়ারফোর্স। ফ্রান্সের সামরিক বাহিনীও ভূমিকা রাখে। পশ্চিমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলা ইসরায়েলের প্রতিবেশী দেশ জর্ডানও তাদের আকাশসীমায় ইরানের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে।

ইরানের তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে গুটিকয় ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। তাতে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত ও একটি শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। এর জবাবে ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল।