লেবানন ও গাজায় ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী হামলার নিন্দা জানিয়ে গতকাল শুক্রবার ইরান ও ইয়েমেনে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার খবরে বলা হয়, লেবাননে ইরান–সমর্থিত হিজবুল্লাহর প্রতি সমর্থন এবং ‘ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্রের বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানাতে’ কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানায়। এতে সাড়া দিয়ে রাজধানী তেহরানসহ দেশটির অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান–সমর্থিত যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় আছে, হিজবুল্লাহ তাদের একটি। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেখানকার ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রতি সমর্থন জানাতে ইসরায়েলি ও মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল হিজবুল্লাহ।
তবে গত সপ্তাহ থেকে লেবাননে হিজবুল্লাহ অবস্থান লক্ষ্য করে তীব্র বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। লেবাননের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গত সোমবার থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত লেবাননে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার ইরান ও ইয়েমেন ছাড়াও বাহরাইনে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। বাহরাইন ইসরায়েলের মিত্রদেশ। দেশটির সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শক্ত হাতে দমন করেছে।
এএফপির একজন সাংবাদিক জানান, তেহরানে শুক্রবার জুমার নামাজের পর নগরকেন্দ্রের ইনঘেলাব স্কয়ার ঘিরে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের হাতে হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহর ছবি এবং ফিলিস্তিনি ও হিজবুল্লাহর পতাকা ছিল। তাঁরা ‘ইসরায়েলের ধ্বংস, লেবাননের বিজয়’ বলে স্লোগান দেন।
লেবাননে যে ‘রক্তগঙ্গা বইছে’ তার তীব্র নিন্দাও জানান তাঁরা। পোড়ান ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তেহরান ছাড়াও সেমনান, কোম, কাশান, কেরমানশাহ, সিরাজ এবং বন্দর আব্বাস নগরে বিক্ষোভ হওয়ার খবর এবং ভিডিও ফুটেজ প্রচার করা হয়েছে।
ইরান–সমর্থিত আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আয়োজনে শুক্রবার রাজধানী সানায় কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের একদিন আগেই হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।
প্রায় এক দশক ধরে সানার নিয়ন্ত্রণ হুতি বিদ্রোহীদের হাতে। শুক্রবার বিক্ষোভের সময় বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে রাইফেল ছিল। কেউ কেউ প্ল্যাকার্ড হাতে আসেন।
হুতি সমর্থক মুরতাদা আল-মুতাওয়াকিল বলেন, ‘আমি লেবাননে আমাদের ভাইদের বলতে চাই, আপনারাই বিজয়ী হবেন। ইসরায়েলি শত্রুদের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম বা শেষ যুদ্ধ নয়।’