ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল সোমবার জানান, তিনি ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধিদলের পূর্বনির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল করেছেন।
ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ার জেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতানিয়াহু। ওই প্রস্তাব পাসের ভোটাভুটিতে ভেটো দেয়নি ওয়াশিংটন।
এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি পাস হওয়া ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্যর্থতা’ মার্কিন প্রশাসনের আগের অবস্থান থেকে ‘স্পষ্টত সরে আসার’ উদাহরণ। এটা হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধপ্রচেষ্টার পাশাপাশি হামাসের হাতে থাকা ১৩০ জনের বেশি জিম্মিকে মুক্ত করার চেষ্টাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন করে ‘আগের অবস্থান থেকে সরে আসার’ পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল পূর্বনির্ধারিত ওয়াশিংটন সফরে যাবেন না।
ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে গতকাল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়। যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি অবিলম্বে ও নিঃশর্তে হামাসের হাতে জিম্মি দশায় থাকা ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে এ প্রস্তাবে। এ প্রস্তাবে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র।
পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসের চেষ্টা আগেও কয়েক দফায় হয়েছে। প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের কারণে সেগুলো আটকে যায়। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে এবারই প্রথম নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়েছে।
তবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ‘আগের অবস্থান থেকে সরে আসার’ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে দেশটির একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের ওয়াশিংটন সফর করার কথা ছিল। রাফায় ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।
নেতানিয়াহুর এমন সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কারবি। তিনি বলেন, সফর বাতিলের সিদ্ধান্তটি দুর্ভাগ্যজনক। তবে যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের সরকারের মধ্যে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের নীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করবে।