ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন শেষ হয়েছে। আজ শনিবার চলছে দ্বিতীয় দিন। যুদ্ধবিরতির দিনগুলোয় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে বন্দী বিনিময় হবে। একই সঙ্গে গাজায় হামলা ও অভিযান বন্ধ রাখবে ইসরায়েল।
সংঘাত শুরুর দেড় মাস পর গত বুধবার যুদ্ধবিরতিতে একমত হয় হামাস ও ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ইসরায়েল থেকে জিম্মি করা ২৪ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। অপর দিকে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৩৯ ফিলিস্তিনি। কাতারের হামাদ বিন খালিফা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সুলতান বারাকাতের মতে, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন থেকে তিনটি শিক্ষা পাওয়া গেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। সেদিন থেকে গাজায় অবিরাম হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। সুলতান বারাকাতের ভাষ্যমতে, এই রক্তারক্তির আগেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার সুযোগ ছিল। এটিই যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন থেকে পাওয়া প্রথম শিক্ষা।
অধ্যাপক সুলতান বারাকাত বলেন, সংঘাতের শুরু থেকেই হামাস বলেছে, ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে তারা জিম্মি করা ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে আগ্রহী। তাই দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েল ও হামাস আগেই আলোচনায় বসতে পারত এবং গাজায় এই ধ্বংসযজ্ঞের আগেই তারা একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারত।
সুলতান বারাকাতের মতে দ্বিতীয় শিক্ষাটি হলো, ইসরায়েল ও হামাসের হাতে বন্দী ব্যক্তিদের মধ্যে মিল। তিনি বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন ১৭ শিশুকে মুক্তি দিয়েছে। বিনা বিচারে তাদের কয়েক বছর ধরে আটক করে রাখা হয়েছে। এদের সঙ্গে হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া শিশুদের পার্থক্য কোথায়?
কাতারের এই অধ্যাপক সুলতান বারাকাত বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ইসরায়েল যেসব বন্দীদের মুক্তি দিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে হামাসের সরাসরি কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটিই যুদ্ধবিরতি থেকে পাওয়া তৃতীয় শিক্ষা। মুক্তি পাওয়া এসব ফিলিস্তিনিদের কাউকেই ৭ অক্টোবরের পর আটক করা হয়নি। ইসরায়েলি দখলদারত্বের প্রেক্ষাপটে তাঁদের দীর্ঘদিন ধরে বন্দী রাখা হয়েছিল। এখন যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের বেশির ভাগই পশ্চিম তীরের বাসিন্দা। আর হামাস এটিকে কাজে লাগিয়ে সেখানে নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির এই চুক্তি আলোর মুখ দেখেছে। চুক্তির আওতায় গাজায় হামলা বন্ধের পাশাপাশি চার দিনে ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। বিনিময়ে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর মধ্যে আজ দ্বিতীয় দিনে ৪২ বন্দীকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। অপর দিকে ১৪ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।