কাতারের দোহা ছেড়েছেন গাজার বাইরে অবস্থান করা সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ হামাস নেতা এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির মধ্যস্থতাকারী দলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। কাতার সরকার ও একজন জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, দোহায় হামাসের কার্যালয়ের আর কোনো কার্যকারিতা নেই। কারণ, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য সব ধরনের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে কাতার। যদিও তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এ প্রচেষ্টা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি।
ফিলিস্তিনি ওই কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতার জন্য হামাসের পক্ষের আলোচকেরা ওই অঞ্চলে তাঁদের অবস্থান বদলেছেন। স্বাগতিক দেশগুলো যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না পড়ে, সে জন্য নিজেদের অবস্থান গোপন রাখছেন তাঁরা।
কাতার আনুষ্ঠানিকভাবে হামাসকে চলে যেতে বলেছে, এমন খবরও অস্বীকার করেছেন ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বর্তমান প্রশাসন এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন প্রশাসনের মধ্যে কোনো উত্তেজনা এড়াতে সতর্কতার সঙ্গে নিজেদের অবস্থান বেছে নিচ্ছে।
২০১২ সাল থেকে কাতারে কার্যক্রম চালাচ্ছে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ যুদ্ধবিরতি আলোচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এই ব্যুরো। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো কাতার ও ব্যুরোর মধ্যকার সম্পর্কে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে কাতার ঘোষণা করেছিল, দেশটি গাজা যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে। উভয় পক্ষ যখন নৃশংস এই যুদ্ধ শেষ করতে সদিচ্ছা ও গুরুত্ব দেখাবে, তখন কাতার আবার যুদ্ধবিরতি আলোচনার চেষ্টা শুরু করবে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছেন, মধ্যস্থতাকারী দলে থাকা হামাসের নেতারা এখন দোহায় নেই। তিনি জোর দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাতারে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর কার্যালয় স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের কাছ থেকেই জানতে পারবেন। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানের অংশ হওয়া উচিত নয়।’
ইসরায়েলি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন করা হয়েছে, হামাসের নেতারা কাতার ছেড়ে তুরস্কে চলে যাচ্ছেন। তবে গত সোমবার এক টেলিগ্রাম বিবৃতিতে হামাস বলেছে, সংগঠনটির বিভিন্ন সূত্র এ দাবি অস্বীকার করেছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ দাবি অস্বীকার করেছে। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্র বলেছে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্যরা সময়ে সময়ে তুরস্কে ভ্রমণ করেন। কিন্তু তাঁরা তাঁদের কার্যালয় তুরস্কে স্থানান্তর করেছেন, এই দাবি সত্য নয়।