ইসরায়েলের উত্তর উপকূলে তিন হাজার বছরের বেশি পুরোনো জাহাজের সন্ধান পাওয়া গেছে। জাহাজটির মালামালও অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের উত্তর উপকূল থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরের তলদেশের ৫ হাজার ৯০৫ ফুট গভীরতায় জাহাজটি পাওয়া গেছে। নিয়মিত তেল ও গ্যাস জরিপের সময় এই ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাহাজটি ৩ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো। জাহাজটিতে শত শত অক্ষত মালামাল (অ্যাম্ফোরাই) পাওয়া গেছে।
ইসরায়েল অ্যান্টিকুইটিস অথরিটির (আইএএ) বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই সময়ের নাবিকেরা আকাশের নেভিগেশন ব্যবহার করে সূর্য ও তারার অবস্থান জেনে সমুদ্রে চলাচল করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আইএএ বলছে, জাহাজের ধ্বংসাবশেষ এই অঞ্চলে পাওয়া ‘প্রথম ও প্রাচীনতম’। সম্ভবত কোনো ঝড়ের সময় বা জলদস্যুদের আক্রমণের কারণে জাহাজটি ডুবে গিয়েছিল।
আইএএর সমুদ্র ইউনিটের প্রধান জ্যাকব শারভিট বলেছেন, প্রাচীন নাবিকদের নৌ চলাচল দক্ষতার তথ্য এই জাহাজের সন্ধান পাওয়ার পরই জানা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘এ থেকে বলা যায়, কোনো উপকূল ছাড়াই আমাদের পূর্বপুরুষেরা ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করতে সক্ষম ছিলেন।’
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনে তালিকাভুক্ত এনার্জি সংস্থা এনার্জিন সমুদ্রের তলদেশে জাহাজটির সন্ধান পায়।
জাহাজটিতে শতাধিক মালামালের মধ্যে দুই হাতলবিশিষ্ট জগ পাওয়া গেছে। এসব জগে ব্রোঞ্জ যুগে সমুদ্রে মদ বা জলপাই তেলের মতো পণ্য সংরক্ষণ করা হয়েছিল। জ্যাকব শারভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি ব্রোঞ্জ যুগের শেষের দিকে একটি সুপরিচিত ঘটনা। এটি একটি বিশ্বমানের ইতিহাস-পরিবর্তনকারী আবিষ্কার।
ধারণা করা হচ্ছে, সন্ধান পাওয়া জাহাজটি খ্রিষ্টপূর্ব ১৩ বা ১৪ শতকের। ব্রোঞ্জ যুগের সে সময় সামুদ্রিক বাণিজ্য বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল।
এনার্জিনের এনভায়রনমেন্ট লিড কার্নিত বাহার্তান বলেন, ‘আমরা যখন তাদের (আইএএ) কাছে ছবিগুলো পাঠিয়েছিলাম, তখন তাদের কাছে এটি চাঞ্চল্যকর আবিষ্কারে পরিণত হয়েছিল। এটা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।’
এনার্জিন জাহাজটি থেকে কিছু মালামাল বের করতে কাজ শুরু করেছে। শিগগিরই সেসব জনসাধারণের সামনে উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।