ফিলিস্তিনের গাজার অর্ধেক মানুষ অভুক্ত থাকছেন। সেখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই। গাজা পরিদর্শনের পর এমনটাই বলেছেন জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) উপপরিচালক কার্ল স্কাউ।
গত শুক্রবার গাজা পরিদর্শন করেন কার্ল। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘এখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই। মানুষ অভুক্ত থাকছে।’
এক্সে দেওয়া পোস্টে ডব্লিউএফপির উপপরিচালক আরও বলেন, প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তার সামান্যই গাজায় ঢুকতে পারছে। এখানকার বাসিন্দাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনেরই প্রতিদিন খাবার জোটে না।
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার দিকে ইঙ্গিত করে কার্ল বলেন, গাজার পরিস্থিতির কারণে ত্রাণ পৌঁছানো ‘প্রায় অসম্ভব’ হয়ে উঠেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে এবং জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্ত করতে বিমান হামলা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট গতকাল শনিবার বিবিসিকে বলেছেন, ‘যেকোনো বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। কিন্তু আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।’ গাজায় যত বেশি সম্ভব ত্রাণসহায়তা পৌঁছাতে সব রকমের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এখন গাজায় মিসর সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং খোলা রয়েছে। এই ক্রসিং দিয়ে সীমিত ত্রাণ গাজায় ঢুকছে।
চলতি সপ্তাহে ডব্লিউএফপি দলের গাজা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কার্ল আরও বলেন, তাঁরা গুদাম ও বিতরণকেন্দ্রগুলোর সামনে হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষকে মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করতে দেখেছেন। সেখানকার দোকানগুলো ছিল শূন্য। আর শৌচাগারের সামনে ছিল দীর্ঘ লাইন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ওই দিনই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশেও বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটি। অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দারা ত্রাণসহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। নিহত ফিলিস্তিনিদের ৭০ ভাগই নারী ও শিশু। শুধু নিহত শিশুর সংখ্যাই ৭ হাজারের বেশি। আর ইসরায়েল বলেছে, এতে প্রায় ১ হাজার ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন।