নারীদের পোশাকবিধি কঠোর করছে ইরান

ইরানের বাধ্যতামূলক ইসলামি পোশাকবিধি অমান্য করার অভিযোগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মাসা আমিনিকে আটক করে দেশটির নীতি পুলিশ। ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়
ছবি: টুইটার

ইরানে যেসব নারী ইসলামিক পোশাকবিধি লঙ্ঘন করবে, তাঁদের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে—এমন বিধান রেখে আজ বুধবার দেশটির সংসদে বিল পাস করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানায়, ‘হিজাব ও শুদ্ধতার সংস্কৃতির পক্ষে সমর্থন’ নামে আনা বিলটি তিন বছরব্যাপী পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। তবে বিলটি সংসদে পাস হলেও এখন তা দেশটির ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিল’ থেকে অনুমোদন পেতে হবে। এরপর তা আইনে পরিণত হবে।

ইরানের বাধ্যতামূলক ইসলামি পোশাকবিধি অমান্য করার অভিযোগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মাসা আমিনিকে আটক করে দেশটির নীতি পুলিশ। ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। মাসার মৃত্যুর জেরে দেশটিতে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভ ঠেকাতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক দমন–পীড়ন চালায়। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিন্দা জানায়। বিক্ষোভের ঘটনায় শতাধিক মানুষ নিহত ও হাজারো মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে।

এসব বিক্ষোভের পর থেকে দেশটিতে নারীদের মধ্যে কঠোর পোশাকবিধি মেনে চলার প্রতি উদাসীনতা বেড়েছে।

ইরানে পুলিশি হেফাজতে তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় দেশটির বাইরেও বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা আমিনির ছবি হাতে প্রতিবাদ করেন। গতকাল তুরস্কের ইস্তাম্বুলে

খসড়া আইনে বলা হয়, ‘বিদেশি সরকার বা বৈরী সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলোর সরকার, গণমাধ্যম বা বিভিন্ন গ্রুপ বা সংস্থার প্ররোচনায়’ নারীরা মাথায় স্কার্ফ বা যথাযথ পোশাক পরিধান করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এসব নারীর ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

ইসলামি বিপ্লবের পর প্রজাতন্ত্রের শুরুর দিকের বছরগুলো থেকে ইরানে নারীদের মাথা, গলা ও ঘাড় ঢেকে চলা বাধ্যতামূলক।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যেসব নারী পোশাকবিধি অমান্য করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ নজরদারি বাড়িয়েছে। এমনকি যেসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নারীরাও এই বিধির প্রতি উদাসীনতা দেখান, সেসব প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জনপরিসরে কেউ এই বিধি অমান্য করে কি না, তা দেখতে নজরদারি ক্যামেরা বাড়ানো হয়েছে।