অবরুদ্ধ গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। সেখানে গত দুই দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গতকাল শনিবার বলেছেন, গাজা সিটির জয়তুন এলাকায় রাতে একটি আবাসিক ভবনে হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। অন্য হত্যাগুলো ঘটেছে গাজার মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় আল-ফারুক মসজিদে উল্লেখ করার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মসজিদটি গাজার মধ্যাঞ্চলের নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরের ভেতরে অবস্থিত। আল–জাজিরা ভিডিওটি যাচাই করে সত্যতা পেয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলার পাশাপাশি গাজায় স্থলাভিযানও জোরদার করেছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। সেখানে এখন পর্যন্ত আংশিকভাবে হলেও চিকিৎসার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হাসপাতালগুলোর একটিতে হামলা হয়েছে, আহত হয়েছেন হাসপাতালের বেশ কয়েকজন কর্মী।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক হুসাম আবু সাফিয়া গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী সরাসরি হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের প্রবেশপথ এবং অভ্যর্থনা এলাকা লক্ষ্য করে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। তারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণ, বৈদ্যুতিক জেনারেটর ও হাসপাতাল ফটক লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে।
হামলায় ১২ জন আহত হয়েছেন বলেও জানান কামাল আদওয়ান। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জরুরি ও অভ্যর্থনা এলাকায় থাকা চিকিৎসক, নার্স ও কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মী রয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রাথমিক পর্যালোচনার পর তারা বলেছে, তারা কামাল আদওয়ান হাসপাতাল এলাকায় হামলার বিষয়ে অবগত ছিল না।
গত মাস থেকে গাজার উত্তরাঞ্চল অবরোধ করে পুনরায় স্থলাভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা হামাস যোদ্ধাদের ওই এলাকায় পুনরায় সংগঠিত হওয়া এবং আরও হামলা চালানো থেকে প্রতিহত করতে এ অভিযান পরিচালনা করছে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘ থেকে সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েল নতুন করে অভিযান শুরু করার পর থেকে গাজার উত্তরাঞ্চলে বলতে গেলে কোনো ত্রাণ সরবরাহ করা যায়নি। নানা ত্রাণ সংস্থা ও খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে ওই এলাকা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজারের বেশি মানুষ।