ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ রোববার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হারেৎজ বলছে, আইডিএফের নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তুতির তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা। এই ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কোনো ইউনিট।
বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অন্যান্য ইউনিট ও পুলিশের বিরুদ্ধেও মার্কিন প্রশাসন একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে হারেৎজ। নেতজাহ ইয়েহুদার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে ব্যাটালিয়নটি মার্কিন বাহিনীর কোনো সহায়তা পাবে না। ব্যাটালিয়নটির সদস্যরা মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কোনো প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন না। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তায় চলা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম থেকেও তাঁদের বিরত রাখা হবে।
নেতজাহ ইয়েহুদার ওপর সম্ভাব্য এই নিষেধাজ্ঞার খবর সামনে এসেছে গত শুক্রবারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের এক বক্তব্যের পর। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের লেইহি আইনের লঙ্ঘন করেছে, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু ‘সংকল্প’ করেছেন তিনি।
১৯৯৭ সালে লেইহি আইন কার্যকর করে যুক্তরাষ্ট্র। এই আইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো ইউনিটকে সামরিক সহায়তা বন্ধের কথা বলা হয়েছে। আইনটি কার্যকরের পর থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিশ্বে নিরাপত্তা বাহিনীর শত শত ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন সরকার।
এদিকে নেতজাহ ইয়েহুদার ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা। দেশটির প্রধামন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক্সে (সাবেক টুইটার) বলেন, ‘আইডিএফের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অবশ্যই উচিত হবে না। ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা রুখতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় কাজ করেছি আমি। এ নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে।’
নেতজাহ ইয়েহুদাকে আইডিএফের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য ও আইডিএফের সাবেক চিফ অব স্টাফ বেনি গানৎস। তিনি বলেন, ইসরায়েলের একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। আইডিএফের আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে কোনো অভিযোগ তোলা হলে, তা এই বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে সতর্কতার সঙ্গে মূল্যায়ন করে দেখা হয়। আর সেটা ভবিষ্যতেও করা হবে।