ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ধসে পড়েছে ভবন। এই ভবনে ছিল আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংকের একটি শাখা
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ধসে পড়েছে ভবন। এই ভবনে ছিল আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংকের একটি শাখা

ব্যাংকে হামলা করায় ইসরায়েলকে নিয়ে লেবাননে বিদ্রূপ

লেবাননের আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংকের শাখায় একযোগে হামলা চালানোয় ইসরায়েলকে নিয়ে বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করেছে ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার লেবাননজুড়ে ব্যাংকটির শাখায় একযোগে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। আজ সোমবার আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এসব হামলা দেখে বোঝা যাচ্ছে, শত্রুপক্ষ (ইসরায়েল) দেউলিয়া হয়ে গেছে।’

ইসরায়েলের দাবি, ইরান–সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহকে অর্থায়ন করে আসছে আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংক। এ জন্য লেবাননজুড়ে ব্যাংকটির শাখাগুলোতে হামলা করেছে তারা।

তবে আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে বলেছে, তাদের ব্যাংকের শাখায় শাখায় এমন হামলা শত্রুপক্ষের (ইসরায়েলের) দেউলিয়া হয়ে যাওয়ারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। একই সঙ্গে বোঝা যাচ্ছে যে ইসরায়েল এখন কোথায় হামলা চালাবে, তা খুঁজে পাচ্ছে না। এ কারণে তারা যত্রতত্র হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলার মানে ইসরায়েল এখন লেবানননে সামাজিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংক বিবৃতিতে বলেছে, লেবাননে ইসরায়েলের হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই জনগণের আমানত আর আস্থা ধরে রাখার পাশাপাশি ব্যাংকের কর্মীদের জীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছিল তারা। একই সঙ্গে ব্যাংকটি আরও দাবি করেছে, ইসরায়েলের হামলায় তাদের ব্যাংকের যেসব শাখা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব শাখাতে কোনো নগদ অর্থ ছিল না।

তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এমন দাবি বিবিসির একার পক্ষে যাচাই করে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে হামলার শিকার ব্যাংক থেকে অর্থ সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখা হলেও ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর গতকাল রাতের ঘোষণার পর থেকেই আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে রাজধানী বৈরুতে অর্থ রাখা আমানতকারীরা বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বৈরুতে ব্যাংকটির ১৫টি শাখা রয়েছে।

আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিবৃতিটি হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও অনলাইন মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। বিবৃতির শেষ অংশে ইসরায়েলি হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে একটি প্রবাদ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত’। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের বেসামরিক স্থাপনা ও অবকাঠামোতে হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকে হামলা গুরুত্বপূর্ণ: গান্টজ

লেবাননে ব্যাংকে হামলার ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা বেনি গান্টজ। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আল-কারদ আল-হাসান ব্যাংকে এমন হামলা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সাবেক এই সদস্য বেনি গান্টজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হিজবুল্লাহকে প্রতিবছর ৫০ কোটি করে ডলার দিয়েছে ইরান।

লেবাননের মতো আর্থিক দুর্দশাগ্রস্ত একটি দেশের জন্য এটাকে প্রচুর অর্থ বলে মন্তব্য করেছেন বেনি গান্টজ। তিনি এক্সে আরও লিখেছেন, ‘এর ফলে যেটা হয়েছে লেবাননের সেনাবাহিনীর নিয়মিত সৈনিকেরা খাবারের সংকটে ভুগছে। অন্যদিকে হিজবুল্লাহর মতো একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যরা পর্যাপ্ত খাবারের সরবরাহ পাচ্ছে। পাশাপাশি হিজবুল্লাহ সদস্যদের পরিবারও নিয়মিত খাবার পাচ্ছে।’