‘আমরা একসঙ্গে পথ চলব। চীন, রাশিয়া বা ইরানকে পূরণের জন্য কোনো শূন্যস্থান রাখব না’— সম্প্রতি সৌদি আরবের জেদ্দায় ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও উন্নয়ন’ শীর্ষক সম্মেলনে আরব নেতাদের এভাবে আশ্বস্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি আরও বলেন, ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে পুরোপুরি নিযুক্ত থাকবে। এখানে অন্য বিশ্বশক্তিকে প্রভাব বিস্তার করতে দেবে না।
তবে বাইডেন যা-ই বলুন না কেন, যুক্তরাষ্ট্র যে মধ্যপ্রাচ্যে আগের মতো সক্রিয় থাকছে না, তা স্পষ্ট। তবে একেবারে যে শূন্যতা সৃষ্টি করে যাচ্ছে, সেটাও নয়। মধ্যপ্রাচ্যে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ‘দেখভালের’ দায়িত্বটা পালন করবে ইসরায়েল। আর সে আয়োজনটা মোটামুটি গুছিয়ে আনা হয়েছে। মধ্য জুলাইয়ের এই সম্মেলন এবং সম্মেলনকে ঘিরে বাইডেনের ইসরায়েল ও সৌদি সফর ছিল মূলত তারই অংশ।
বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের শেষভাগে জেদ্দায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গালফ কো–অপারেশন কাউন্সিলের ছয় সদস্যের পাশাপাশি মিসর, জর্ডান ও ইরাক এ সম্মেলনে অংশ নেয়। এই সম্মেলনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল আরব বিশ্বের সঙ্গে ইসরায়েলকে একীভূত করা এবং ইরানের বিরুদ্ধে আরব বিশ্বের যৌথ পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা।
যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই অঞ্চলে যতটা সম্ভব সক্ষমতা যুক্ত করার অসামান্য মূল্য রয়েছে। ইসরায়েলের কাছে প্রয়োজনীয় আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা রয়েছে। আমরা এসব নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সৌদি আরব সফরের আগমুহূর্তে ‘সব ধরনের উড়োজাহাজের জন্য’ নিজেদের আকাশসীমা থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। দৃশ্যত ইসরায়েলকে সুবিধা দিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর ইহুদি রাষ্ট্রটি থেকে সরাসরি সৌদি যান বাইডেন। ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি ইসরায়েল থেকে এমন আরব দেশে সরাসরি যাওয়া প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তিনি। এর আগে ২০১৭ সালে বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি থেকে সরাসরি ইসরায়েলে গিয়েছিলেন। দৃশ্যত সৌদি আকাশসীমায় ‘ইসরায়েল ট্যাবু’ ভাঙতেই মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সফরে এই কৌশল নেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আব্রাহাম অ্যাকর্ডের অধীন ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। একই পথ অনুসরণ করে বাহরাইন ও মরক্কো। আঞ্চলিক মিত্রদের এমন পদক্ষেপের বিরোধিতা করেনি সৌদি আরব। অবশ্য ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপনে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে রিয়াদ। উদ্দেশ্য সুন্নি বিশ্বে সৌদির নেতৃত্ব যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।
ইরানের সঙ্গে আরব দেশগুলোর বিরোধ পুরোনো। তারা এই অঞ্চলে শিয়া ইরানের আধিপত্য মেনে নেবে না। আরব দেশগুলোর নাগরিকদের মানসিকতাও একই। অন্যদিকে ইসরায়েলের চিরশত্রু ইরান। মধ্যপ্রাচ্যে এখন একমাত্র তেহরানকেই চ্যালেঞ্জ মনে করে তেল আবিব। এই অভিন্ন শত্রুই আরব ও ইসরায়েলকে একই ছাতার নিচে এনেছে। আরব নেতাদের ইসরায়েল বোঝাতে সক্ষম হয়েছে, ইরান এভাবে এগোতে থাকলে তাদের নেতৃত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
তবে নিরাপত্তার বিষয়ে আরবদের কাছে টানতে একটু সময় লেগেছে ইহুদি নেতৃত্বের। আর সেই মোক্ষম সুযোগটি করে দিয়েছে ইরান–সমর্থিত শিয়াপন্থী হুতিরা। আরব বিপ্লবের হাত ধরে ইয়েমেনে গণতান্ত্রিক সরকার আসে। তারা পক্ষে পায় সৌদি আরবকে। কিন্তু ২০১৫ সালের শুরুর দিকে রাজধানী সানা আক্রমণ করে মানসুর হাদির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে হুতি বিদ্রোহীরা। মার্চে হাদি সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আনতে দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।
এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হতে থাকে। হুতিদের সহায়তায় এগিয়ে আসে ইরান। তেহরানের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও হামলাকারী ড্রোনের প্রযুক্তি রপ্ত করে সৌদি আরবের তেলক্ষেত্র, সামরিক স্থাপনা ও বিমানবন্দরে একের পর এক হামলা করতে থাকে হুতি বিদ্রোহীরা। এতে কিছুটা বিপাকে পড়েন যায় সৌদিরাজ। ২০১৯ সালে হুতি বিদ্রোহীদের হামলায় সৌদি আরবের মোট তেল উৎপাদনের অর্ধেকে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতিতে যেতে বাধ্য হয় রিয়াদ, যা সৌদির জন্য একধরনের পরাজয়ই বলা চলে।
গত ১৭ জানুয়ারি হুতিরা ইয়েমেনের সীমান্ত থেকে এক হাজার মাইল দূরে আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে ড্রোন হামলা চালায়। এমন হামলার পর পাল্টে যায় মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তির হিসাব-নিকাশ। হামলায় তিনটি তেলের ট্যাংকার বিস্ফোরিত হয়। এ ছাড়া আগুন লাগে আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত এলাকায়। এসব ঘটনায় দুই ভারতীয় ও এক পাকিস্তানি নিহত হন। ওই মাসের শেষ নাগাদ আমিরাতে তিন দফা হামলা চালায় হুতিরা।
হামলার এক দিন পর ইরানের বক্তব্য ছিল, ইয়েমেন সংকট সামরিক অভিযানের মাধ্যমে সমাধান করা যাবে না। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদেহ বলেন, সামরিক অভিযানে সমস্যার তো সমাধান হবেই না; বরং তা এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াবে। অন্যদিকে, ইরান-সমর্থিত ইরাকের আসাইব আহল আল-হক সশস্ত্র সংগঠন আবুধাবিতে হামলার জন্য হুতিদের ‘অভিনন্দন’ জানায়।
যেন এ ধরনের একটি মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিল ইসরায়েল। ইরানজুজু যে বাস্তব, আরব নেতাদের সেটা বোঝাতে আর অতিরিক্ত কিছু করতে হলো না তেল আবিবের। আমিরাতভিত্তিক সৌদি সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া জানায়, হুতিদের হামলার পর আমিরাতকে ‘নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা’ সহযোগিতার প্রস্তাব দেয় ইসরায়েল।
সৌদি আরবের আরেকটি ভয় হলো তুরস্কের কাছে সুন্নি বিশ্বের নেতৃত্ব হারানো। আরব বিপ্লবের সময় মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো গণতন্ত্রপন্থীদের সমর্থন দিয়ে সেই আশঙ্কার পালে হাওয়া দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এ ছাড়া কাতার অবরোধসহ আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যুতে দুই মেরুতে অবস্থান নেয় আরব বিশ্ব ও তুরস্ক। এই জায়গায় আবার আরবদের সঙ্গে মিল ইসরায়েলের। উভয়ের মধ্যে বাড়ে ঘনিষ্ঠতা। অন্যদিকে এ জন্য চড়া মাশুলও গুনতে হয়েছে আঙ্কারাকে।
সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরব ও তুরস্কের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। তবে শেষ পর্যন্ত সৌদি জোটের অঘোষিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় পিছু হটেন এরদোয়ান। সৌদি-আমিরাত জোটের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর দেন তিনি। একই সঙ্গে ইসরায়েলের সঙ্গেও পুরোনো বিবাদ মেটানোর পথে হাঁটেন তিনি। ফিরে যান অতীতের ‘শূন্য শত্রু নীতিতে’।
গত ২২ জুন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তুরস্কে গেলে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর আগে এপ্রিলের শেষ দিকে সৌদি আরব সফর করেন এরদোয়ান। এ ছাড়া আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয় আঙ্কারা।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি কখনো চীনকে বৈশ্বিক পরাশক্তি হতে দেবেন না। বেইজিংয়ের ওপর তিনি খড়্গহস্ত ছিলেন। চীনা পণ্যের ওপর অস্বাভাবকি শুল্ক আরোপ করে তিনি বাণিজ্য যুদ্ধের সূত্রপাত করেন। চীনকে ঠেকাতে একই পথ অনুসরণ করছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের যত কৌশলগত গুরুত্ব এখন চীনকে ঘিরে, বিশেষ করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে।
এরই অংশ হিসেবে ‘মুক্ত এবং উন্মুক্ত ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের’ রূপকল্প সামনে রেখে কোয়াড গঠন করা হয়। এই জোটের চার সদস্য দেশ অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে ঠেকানোর এই প্রচেষ্টায় ফাঁকফোকর না রাখতে অস্ট্রেলিয়া-ইউকে-ইউএস মিলে গঠন করা হয় ‘অকাস’। কারণ, কঠিন সিদ্ধান্তের সময় ভারত ও জাপানকে পাশে পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে যুক্তরাষ্ট্রের।
এ ছাড়া নিরাপত্তা জোটে যোগ দিতে অনাগ্রহী এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর জন্য গঠন করা হচ্ছে অর্থনৈতিক জোট। এসব থেকে বোঝা যায়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্ব কমেছে ওয়াশিংটনের কাছে।
হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কাবু সৌদির জন্য বড় আঘাত আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত বছরের এপ্রিল থেকে উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক সামর্থ্য পুনর্গঠন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অঞ্চল থেকে কমপক্ষে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরাতে শুরু করে দেশটি। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও নজরদারি ব্যবস্থাও মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরিয়ে নেয় পেন্টাগন।
পরে ১১ সেপ্টেম্বর আল–জাজিরা জানায়, সৌদি আরব থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হুথি বিদ্রোহীদের অব্যাহত হামলার মুখে থাকা দেশটি থেকে তুলে নেওয়া হয় প্যাট্রিয়ট ব্যাটারিগুলোও। রিয়াদের বাইরে প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটি থেকেও নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে বিপাকে পড়ে সৌদি আরব। এমনকি যে সময় হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে গিয়ে সৌদির ক্ষেপণাস্ত্রের ভান্ডারে টান পড়ে, তখন এমন সিদ্ধান্ত ছিল ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।
ওই সময় রিয়াদের কাছে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রিতেও রাজি হয়নি ওয়াশিংটন। ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য শেষ পর্যন্ত মিত্র আরব দেশগুলোর কাছে সৌদি হাত পাতে বলে খবর বের হয়। দৃশ্যত পরিকল্পিতভাবেই এই নিরাপত্তা সংকট তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এর উদ্দেশ্য ছিল হুতির হুমকি মোকাবিলায় সৌদি ও আমিরাত যাতে ইসরায়েলের দ্বারস্থ হয়।
হুতিদের হামলার পরপরই আরব আমিরাতকে ‘নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা’–সম্পর্কিত সহযোগিতার প্রস্তাব দেয় ইসরায়েল। ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট এক চিঠিতে আমিরাতের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদকে বলেন, ‘এই অঞ্চলে চরমপন্থী দলগুলো মোকাবিলায় আপনাদের সঙ্গে ইসরায়েল ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়। কেননা, আমাদের শক্র অভিন্ন।’
জুনের শেষ দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরের শারম আল-শেখ শহরে গোপনে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চিফ অব স্টাফের সঙ্গে দেখা করেন সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, জর্ডান ও মিসরের প্রতিনিধিরা। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন দেশটির সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি।
এর আগে ২০ জুন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানৎজ আইনপ্রণেতাদের এক ব্রিফিংয়ে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে একটি আঞ্চলিক আকাশ প্রতিরক্ষা জোট গঠন করছে ইসরায়েল। তিনি বলেন, ‘গত বছরজুড়ে আমি পেন্টাগন ও মার্কিন প্রশাসনে আমাদের অংশীদারদের নিয়ে বিস্তৃত একটি কর্মসূচির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলাম। এটি ইসরায়েল এবং এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করবে। এ কর্মসূচি ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে।
এটি ইসরায়েল এবং অন্যান্য দেশে ইরানের হামলার প্রচেষ্টা ইতিমধ্যেই সফলভাবে ঠেকিয়ে দিতে সাহায্য করেছে।’ নাম না প্রকাশ করার শর্তে রয়টার্সকে ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা বলেন, একই ধরনের প্রকাশ্য যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা ব্যবহারের পরিবর্তে সহযোগী দেশগুলো দূরবর্তী ইলেকট্রনিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজ নিজ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সমন্বিতভাবে পরিচালনা করছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঘোষণা করা হচ্ছিল না। মূলত এই সফরে আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পর্দার আড়ালে দেনদরবার চলছিল।
এসব তৎপরতার অন্যতম লক্ষ্য, ইসরায়েল এই অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্ব পেলে ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেশি নজর দিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্য জুলাইয়ে এই সফরের পাশাপাশি আই২ইউ২ (ভারত-ইসরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরাত-যুক্তরাষ্ট্র) জোটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমেও এ অঞ্চলে ইসরায়েলের অবস্থান পোক্ত করার মার্কিন প্রচেষ্টা দেখা যায়।