ইরানের তেহরানে গত বুধবার (মঙ্গলবার দিবাগত রাতে) হামলায় নিহত হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়াকে আজ শুক্রবার কাতারে জানাজা শেষে দাফন করা হবে। হানিয়া হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস।
ওই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধ বেধে যাওয়ার আশঙ্কা জোরাল হয়েছে। এদিকে হানিয়ার সম্মানে আজ এক দিনের শোক ঘোষণা করেছে তুরস্ক ও পাকিস্তান।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির একই শাখার অন্য সদস্যদের পাশাপাশি কাতারের রাজধানী দোহায় থাকতেন।
হামাস জানিয়েছে, জানাজায় আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর নেতারা ছাড়াও সাধারণ জনগণ ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
কাতারের ইমাম মোহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব মসজিদে জানাজা শেষে ইসমাইল হানিয়াকে রাজধানী দোহার উত্তরে লুসাইল এলাকার একটি কবরস্থানে দাফন করা হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা জানায়, দাফন অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলেই তেহরান থেকে হানিয়ার মরদেহবাহী কফিন দোহায় এসে পৌঁছেছে।
হামাস জানিয়েছে, জানাজায় আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর নেতারা ছাড়াও সাধারণ জনগণ ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বলেছে, তেহরানে হামলায় হানিয়া ছাড়াও তাঁর একজন দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হানিয়া তেহরানে এসেছিলেন।
হানিয়া হত্যাকাণ্ডে হামাস ছাড়াও ইরান ও অন্যরা ইসরায়েলকে দায়ী করলেও দেশটি এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি।
বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে এক হামলায় ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কমান্ডার ফুয়াদ শোকরকে হত্যা করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর তেহরানে হানিয়ার ওপর ওই হামলা হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ সিরিয়া, লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনে ইরান–সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। হানিয়া হত্যার সাম্প্রতিকতম ঘটনাটি আঞ্চলিক এ উত্তেজনা আরও উসকে দিয়েছে।
ইসমাইল হানিয়াকে আজ দাফনের আগে গতকাল তেহরানে তাঁর প্রতি শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান শোকার্ত হাজারো মানুষ। সেখানে অনুষ্ঠিত জানাজা পরিচালনা করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। হানিয়া হত্যাকাণ্ডের কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
এদিকে নিহত হামাস নেতার সম্মানে আজ এক দিনের শোক ঘোষণা করেছে তুরস্ক ও পাকিস্তান। আর হামাস ঘোষণা করেছে ‘ভীষণ ক্রোধের দিন’ হিসেবে।
হানিয়া হত্যাকাণ্ড ও গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আজ জুমার নামাজের পর প্রতিটি মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করতে উৎসাহ জুগিয়েছে হামাস।