ইসরায়েলে ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে বলে কয়েক দিন ধরে আলোচনা ছিল। শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ‘বিশাল ঝাঁক’ ছোড়ে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ৯৯ শতাংশ আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
তবে হামলায় ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিমানঘাঁটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত এবং এক শিশু গুরুতর আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। অপরদিকে ইরান বলেছে, হামলায় ইসরায়েলের ওই বিমানঘাঁটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখান থেকেই জঙ্গি বিমান উড়িয়ে ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় ইরানের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন সামরিক কমান্ডার নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতেই তারা এ হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে রোববার সারা দিন আন্তর্জাতিক অঙ্গন ছিল উত্তপ্ত। মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনা ঘিরে সর্বশেষ যেসব তথ্য জানা গেছে, সেগুলো তুলে ধরা হলো—
ইরানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশটির ভূমি থেকে সরাসরি ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, হামলায় তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে।
একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের নেভাটিম বিমানঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। তাতে সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইরান বলেছে, চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ায় ইরানের কূটনৈতিক কম্পাউন্ডে প্রাণঘাতী হামলার বদলা হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
তেহরান এটাও বলেছে যে ইসরায়েল যদি এর পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে আরও বড় পরিসরে হামলার মধ্য দিয়ে তার জবাব দেওয়া হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের হামলা নিয়ে আলোচনার জন্য তাঁর দেশের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইরানের এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনলাইনে ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭–এর নেতাদের সঙ্গে একটি অনলাইন বৈঠক করেছেন। হোয়াইট হাউস বলেছে, মধ্যপ্রাচ্য সংকট আরও বাড়ুক, তা চায় না যুক্তরাষ্ট্র।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল বলেছেন, জি-৭–এর নেতারা সর্বসম্মতিক্রমে ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং সব পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, তিনি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দোল্লাহিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং জোরালোভাবে ইসরায়েলে হামলার সমালোচনা করেছেন।
ইসরায়েলে হামলার জন্য ইরানের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। তারা বলেছে, দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে আগ্রাসনের এই জবাব দেওয়াটা যথাযথ হয়েছে।