ইসরায়েলি বোমায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাড়িঘর। উদ্বেগ আর আতঙ্ককে সঙ্গী করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুরা। ১১ অক্টোবর, ২০২৩, গাজা নগরী
ইসরায়েলি বোমায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাড়িঘর। উদ্বেগ আর আতঙ্ককে সঙ্গী করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুরা। ১১ অক্টোবর, ২০২৩, গাজা নগরী

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন

গাজার বাসিন্দাদের এলাকা ত্যাগে বাধ্য করা ‘যুদ্ধাপরাধের’ শামিল

ফিলিস্তিনের গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের সময় উপত্যকাটির বাসিন্দাদের বারবার এলাকা ত্যাগে বাধ্য করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রাণভয়ে এই মানুষগুলো ছুটে বেড়িয়েছেন গাজার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত। ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এইচআরডব্লিউ। এতে বলা হয়েছে, গাজার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর কর্মকর্তারা যুদ্ধাপরাধ করছেন। এইচআরডব্লিউ এ-সংক্রান্ত তথ্য–প্রমাণ জোগাড় করেছে। এ ছাড়া গাজার অনেক এলাকায় ফিলিস্তিনিদের আর ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। এটি ‘জাতিগত নিধনের’ সংজ্ঞার সঙ্গে মিলে যায়।

এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনটি ১৭২ পৃষ্ঠার। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর সাক্ষাৎকার, স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ছবি এবং লোকজনের কাছ থেকে নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার সংগঠনটির গবেষক নাদিয়া হার্ডম্যান।

জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। এর আগে উপত্যকাটিতে ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের বসবাস ছিল। তখন থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাঁদেরই একজন উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সী রাগেব আল রুবাইয়া।

এএফপিকে রাগেব বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিমান ও ট্যাংক থেকে বোমা হামলা শুরুর পর তিনি নিজের বাড়ি ছেড়ে চলে যান। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁকে এলাকা ত্যাগ করতে হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী জাবালিয়ায় সবকিছু ধ্বংস করছে। তাদের লক্ষ্য হলো উত্তর গাজাকে একেবারে ধ্বংস করে গাজা উপত্যকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা।

এইচআরডব্লিউর মধ্যপ্রাচ্য বিভাগের মুখপাত্র আহমেদ বেনচেমসি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কৌশলগতভাবে গাজার বড় একটি অংশকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা স্থায়ীভাবে বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। এটা জাতিগত নিধনের মধ্যে পড়ে।’