ইসরায়েলের এক মন্ত্রীকে আর সরকারি বৈঠকগুলোয় রাখা হচ্ছে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো বৈঠকে অংশ নিতে পারবেন না বলে আজ রোববার জানিয়েছে দেশটির সরকার। এক সাক্ষাৎকারে ওই মন্ত্রী ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পারমাণবিক বোমা হামলাও বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলার পর তাঁর বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল সরকার।
ইসরায়েলের ওই মন্ত্রীর নাম অ্যামিচে এলিয়াহু। তিনি ঐতিহ্যবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। ইসরায়েলের কোল বারামা রেডিওতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, হামাসের হামলার পর ইসরায়েল যে পরিসরে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে, তাতে তিনি পুরোপুরি খুশি নন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। সেদিন থেকেই গাজায় অব্যাহত বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী। একই সঙ্গে সেখানে চলছে ইসরায়েলের স্থল অভিযান। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকাটিতে ৯ হাজার ৪৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
কোল বারামা রেডিওর সাক্ষাৎকারে অ্যামিচে এলিয়াহুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি গাজার ‘সবাইকে হত্যা করতে’ সেখানে ‘কোনো ধরনের পারমাণবিক বোমা’ ফেলার পক্ষে কথা বলেছিলেন কি না? জবাবে এলিয়াহু বলেন, ‘এটি একটি বিকল্প হতে পারে।’
এর পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, এলিয়াহুর মন্তব্য ‘বাস্তবতাবহির্ভূত’। গাজার যেসব বাসিন্দা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন না, তাঁদের প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করছে ইসরায়েল।
সাক্ষাৎকারে আরেক প্রশ্নে হামাসের হাতে বন্দী ২৪০ জিম্মির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে এলিয়াহু বলেন, ‘জিম্মিদের জীবন কেন সেনাসদস্যের জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে?’ তাঁর এ মন্তব্য ‘বেপরোয়া ও নিষ্ঠুর’ বলে উল্লেখ করেছে জিম্মি ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত ‘দ্য হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং পারসনস ফ্যামিলিস ফোরাম’।
এদিকে সাক্ষাৎকারে দেওয়া মন্তব্যগুলো নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠার পর এক্সে (সাবেক টুইটার) এলিয়াহু লিখেছেন, পারমাণবিক বোমার কথা তিনি ‘রূপক’ অর্থে বলেছিলেন। আর জিম্মিদের নিয়ে তিনি বলেন, জিম্মিদের নিরাপদে ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনতে তিনি সম্ভাব্য সবকিছু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।