আগামী সপ্তাহে ইয়েমেনের রাজধানী সানা যাচ্ছে সৌদি আরব ও ওমানের প্রতিনিধিদল। ইরান-সমর্থিত হুতি সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতেই তাদের এই সফর। এর মধ্য দিয়ে আট বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধই উদ্দেশ্য। এই উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি এসব কথা জানিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক বৈরিতা যে কমে আসছে, এই উদ্যোগ তারই ইঙ্গিত। এর আগে গত মাসে সম্পর্ক স্থাপনে একমত হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরান। বছরের পর বছর বৈরী সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া এবং ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংঘাতে পরস্পরবিরোধী পক্ষগুলোকে দেশ দুটি সমর্থন দিয়ে আসছিল।
ওমানের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান সংলাপের অগ্রগতিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে সৌদি কর্মকর্তাদের সানা সফর। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায়ও শান্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
ইয়েমেনের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ওমানের। কয়েক বছর ধরে দেশটি ইয়েমেনের বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে বিরোধ কমিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আরও বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইরান ও সৌদি আরব এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দূরত্ব কমাতে কাজ করছে ওমান।
ইয়েমেনে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। যদি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়, তাহলে ২০ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া ঈদুল ফিতরের ছুটির আগেই তা ঘোষণা করা হতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
অবশ্য এ বিষয়ে রয়টার্স জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি সৌদি ও ইয়েমেন সরকার।
২০১৪ সালে অস্ত্রের মুখে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে উৎখাত করে সানা দখলে নেন হুতি বিদ্রোহীরা। কার্যত তাঁরা দেশটির উত্তরাংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী সামরিক হস্তক্ষেপ করলে ২০১৫ সাল থেকে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন হুতিরা।
টানা এই সংঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের এক সময়কার কৃষিসমৃদ্ধ দেশটিতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এতে দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষই বাইরের মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।