জামশিদ শারমাহদকে ২০২০ সালে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়েছিল
জামশিদ শারমাহদকে ২০২০ সালে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়েছিল

‘সন্ত্রাসবাদে’ দোষী সাব্যস্ত ইরানি-জার্মান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল তেহরান

‘সন্ত্রাসী হামলা’ চালানোর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান।

এই ব্যক্তির নাম জামশিদ শারমাহদ। তিনি ইরানি ও জার্মানির দ্বৈত নাগরিক। তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য গতকাল সোমবার নিশ্চিত করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

জামশিদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসেরও অনুমতি আছে। ‘দুনিয়ায় দুর্নীতির’ অভিযোগে ২০২৩ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দেওয়া হয়। ইরানের ইসলামি আইনে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

ইরানে রাজতন্ত্রপন্থী একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জামশিদকে অভিযুক্ত করে তেহরান। এই গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে একটি প্রাণঘাতী বোমা হামলা চালানোর অভিযোগ আনে ইরান। এ ছাড়া দেশটির অন্যত্র হামলার পরিকল্পনারও অভিযোগ আনা হয়।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ গতকাল এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদক্ষেপকে একটি কলঙ্কিত ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন।

ওলাফ শলৎজ বলেছেন, জামশিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সে বিষয়ে বিচারে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকও এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ইরানের ‘অমানবিক শাসনের’ কঠোর সমালোচনা করেছেন।

আনালেনা এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁরা বারবার তেহরানকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে একজন জার্মান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরিণতি হবে গুরুতর।

২০২০ সালে ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জামশিদকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়েছিল।

বিবৃতিতে জামশিদকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসে ইরানে সশস্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস–ভিত্তিক ‘কিংডম অ্যাসেম্বলি অব ইরান’ নামের এই গোষ্ঠ খুব বেশি পরিচিত নয়। গোষ্ঠীটি ইরানে রাজতন্ত্র পুনর্বহাল চায়।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব হয়। এই বিপ্লবের মাধ্যমে ইরানে রাজতন্ত্র উৎখাত হয়।

গোষ্ঠীটি বিদেশে রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশন পরিচালনা করে। এগুলো ইরানের বিরোধীদের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করে।

জার্মানির বিরোধী ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক পার্টির (সিডিইউ) নেতা ফ্রিডরিশ ম্যারৎস বলেছেন, তাঁর দেশের একজন নাগরিক জামশিদ। তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর একটি জঘন্য অপরাধ। তিনি এ ঘটনায় জার্মান সরকারকে সুস্পষ্ট ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন।