উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় হামলার নিন্দা করে ইসরায়েলের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলেছে, বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষের মৃত্যুতে তারা খুবই উদ্বিগ্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, এটা একটা ভয়ংকর ঘটনা।
ফিলিস্তিনের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উত্তর গাজার এই শহরের অ্যাপার্টমেন্টে ইসরায়েলের হামলায় ৯৩ জন হয় মারা গেছেন বা নিখোঁজ। এর মধ্যে অনেক শিশু আছে।
মিলার বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কাছ থেকে ঘটনার বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা জানতে চাই, ঠিক কী হয়েছিল। কীভাবে একটি হামলায় এত শিশুর মৃত্যু হতে পারে, আমরা এই প্রশ্নের জবাব চেয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাইনি।’
ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চায়। ইসরায়েল বলছে, তারা হামাসের সামরিক ক্ষমতা গুঁড়িয়ে দিতে চায়। ইসরায়েলকে এই বৃহত্তর কৌশলগত লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে সতর্ক হতে হবে। তাদের এমন একটা পথ নিতে হবে, যাতে এই যুদ্ধ এমনভাবে শেষ হয়, যেখানে বন্দীরা ঘরে ফিরতে পারেন। একটা অন্তহীন পারস্পরিক বিরোধ চালিয়ে লাভ হবে না।’
জাতিসংঘের ত্রাণ সংগঠন ইউএনআরডব্লিউএকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। এর ফলে ইসরায়েলের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইউএনআরডব্লিউএ কোনো কাজ করতে পারবে না। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্তের ফল ভয়ংকর হতে পারে।’
গাজার মানুষের কাছে জীবনধারনের ন্যূনতম ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই সংস্থা কয়েক হাজার কর্মীকে নিয়োগ করেছে। কিন্তু এখানে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে গেলে ইসরায়েলের জমির মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার জানিয়েছেন, যদি ইউএনআরডব্লিউএকে কাজ করতে না দেওয়া হয়, তাহলে গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অর্থ, শিশুদের মারার একটা নতুন পন্থা খুঁজে পাওয়া।
ইসরায়েলে জার্মানির রাষ্ট্রদূত স্তেফেন সেইবার্ট জানিয়েছেন, তিনি এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো উদ্বিগ্ন। গৃহহীন নারী, পুরুষ ও শিশুদের অবস্থা এমনিতেই খুব খারাপ। এরপর তাদের আরও বড় ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ইউএনআরডব্লিউএ তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে। তাদের জন্য আরও অনেক কিছু করা দরকার।
জর্ডান বলেছে, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট।
একই অভিযোগ করে তুরস্ক জানিয়েছে, ইসরায়েল দুই রাষ্ট্র সমাধানের পথ বন্ধ করছে। ফিলিস্তিনিদের তাদের জন্মভূমিতে ফেরার পথও বন্ধ করতে চাইছে ইসরায়েল।
নরওয়ে জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটা প্রস্তাব আনছে, যাতে আন্তর্জাতিক কোর্ট অব জাস্টিসকে এই সিদ্ধান্তের স্পষ্টীকরণ দিতে বলা হবে।
আফ্রিকার দেশ চাদের অভিযোগ, ইসরায়েল এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে ফিলিস্তিনিরা তাদের জীবনদায়ী পরিষেবাও না পেতে পারেন।