যুদ্ধবিরোধী বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাজপথের বিক্ষোভে অংশ নেন বিক্ষোভকারীরা। ২২ জুন, ইসরায়েলের তেল আবিবে
যুদ্ধবিরোধী বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাজপথের বিক্ষোভে অংশ নেন বিক্ষোভকারীরা। ২২ জুন, ইসরায়েলের তেল আবিবে

তেল আবিবের রাজপথে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ইসরায়েলের তেল আবিবের রাজপথে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার বিক্ষোভকারীরা দেশটির জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় তাঁরা দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলে নতুন নির্বাচন এবং গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা শুরুর আট মাস পেরিয়ে গেছে। এর পর থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে ইসরায়েলের শহরগুলোয় বিক্ষোভ হয়ে আসছে। অনেক বিক্ষোভকারী ‘ক্রাইম মিনিস্টার’ ও ‘যুদ্ধ বন্ধ করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করেন।  

শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেন সাই এরেল। তাঁর বয়স ৬৬ বছর। পেশায় একজন ঠিকাদার। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি আমার নাতি–নাতনির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই আমি বিক্ষোভে যোগ দিয়েছি। এখন আমরা যদি বের হয়ে না আসি আর ভয়ংকর এই সরকারের কবল থেকে পরিত্রাণ না পাই, তাহলে তাদের (শিশুদের) কোনো ভবিষ্যৎ থাকবে না।’

ইসরায়েলি আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে ক্ষোভ জানিয়ে এরেল বলেন, ‘নেসেটে (ইসরায়েলি পার্লামেন্ট) সব ইঁদুর বসে আছে। আমি তাঁদের মধ্যে কাউকে কিন্ডারগার্টেনের পাহারাদার হতে দিতে পারি না।’

সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী সংগঠন ‘হোফশি ইসরায়েল’ বলছে, দেড় লাখের বেশি মানুষ গতকালের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর এটা ইসরায়েলে হওয়া বড় বিক্ষোভগুলোর একটি।

তেল আবিবের গণতন্ত্র চত্বরে বিক্ষোভকারীদের অনেকে মাটিতে শুয়ে পড়েন। এর আগে সেখানকার মাটি লাল রং করা হয়। বিক্ষোভকারীরা বলেন, নেতানিয়াহুর হাতে আজ ইসরায়েলের গণতন্ত্র এভাবেই হত্যার শিকার হয়েছে।

জমায়েতে যোগ দেন ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ শিন বেত নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক প্রধান ইউভাল দিসকিন। এ সময় তিনি বলেন, নেতানিয়াহু দেশের সবচেয়ে বাজে প্রধানমন্ত্রী।

৫০ বছর বয়সী ইয়োরাম পেশার একজন ট্যুর গাইড। শনিবারের বিক্ষোভে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহান্তে বিক্ষোভে আসেন তিনি। নেতানিয়াহুর কারণে ইসরায়েলে নির্বাচন দরকার।

ইয়োরাম আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, বর্তমান সরকারের পতন ঘটবে। আর আমরা যদি ২০২৬ সালের নির্বাচনের তারিখের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকি, তাহলে সেটা আর গণতান্ত্রিক কোনো নির্বাচন হবে না।’

এদিকে গতকাল রাতে তেল আবিবের রাজপথে আরেকটি বিক্ষোভ মিছিল করেন হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের হাজারো স্বজন ও সমর্থক।