টুইটারে ভিন্নমতাবলম্বীদের অনুসরণ, সৌদি নারীর ৩৪ বছরের কারাদণ্ড

সালমা আল শিহাব
ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ভিন্নমতাবলম্বী ও মানবাধিকারকর্মীদের অনুসরণ এবং তাদের টুইটগুলো নিজের অ্যাকাউন্টে শেয়ার করায় এক নারী শিক্ষার্থীকে ৩৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরব। সালমা আল শিহাব নামের ওই নারী যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। দেশে ছুটি কাটাতে গিয়ে এই সাজার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

সৌদি আরবের বিশেষ সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে সালমাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ৩৪ বছর বয়সী সালমা দুই সন্তানের মা। শুরুতে ‘জনবিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং বেসামরিক ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নকারী’ ওয়েবসাইটে প্রবেশের অপরাধে তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সরকারি কৌঁসুলি আদালতকে সালমার অন্য অপরাধগুলো বিবেচনা করার অনুরোধ জানালে আদালত এ নারীকে ৩৪ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়। আর গত সোমবার আপিল আদালত তাঁর বিরুদ্ধে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেন।

আদালতের নথির বরাতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে সালমার বিরুদ্ধে আনা নতুন অভিযোগগুলোও তুলে ধরা হয়েছে। নতুন অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে জনবিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং বেসামরিক ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন করতে পারে, এমন মানুষদের টুইটার অ্যাকাউন্ট অনুসরণ এবং টুইট শেয়ার করে তাদের সহযোগিতা করছেন সালমা।

তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন এই নারী।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সৌদি আরব সফরের কয়েক সপ্তাহের মাথায় দেশটির বিশেষ আদালত সালমার বিরুদ্ধে এমন সাজা ঘোষণা করলেন। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে নিজ দেশে নারী অধিকারকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সমালোচকদের নৃশংসভাবে দমন-পীড়নসহ গুরুতর সব অভিযোগ রয়েছে। তিনি সবচেয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন সৌদির নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারকালে বাইডেন সৌদির মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ সরব ছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি সাংবাদিক খাসোগি হত্যার ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সৌদি আরব সফরে গিয়ে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বাইডেন ‘ফিস্ট বাম্প’ করলে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবিটি মানবাধিকারের পক্ষের লোকজনের জন্য ছিল মারাত্মক এক ধাক্কা। তাঁরা বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন।