গাজা উপত্যকায় ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া মানুষের ওপর ইসরায়েল বাহিনীর চালানো গুলিতে নতুন করে আরও ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫৫ জন। আজ শুক্রবার ভোরে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন দাবি করেছে। তবে খবরটি অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।
পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ব্যর্থ হয়েছেন মধ্যস্থতাকারীরা। সেখানে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ফিলিস্তিনের বিধ্বস্ত ভূখণ্ডটিতে আরও বেশি করে ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার জোর প্রচেষ্টা দেখা গেছে। আর এ ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপরই হামলা চালানো হয়।
উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা নগরীতে ত্রাণের জন্য জড়ো হওয়া নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুরুতে ১১ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হওয়ার কথা জানানো হলেও পরে তা সংশোধন করে সে সংখ্যা বাড়ানো হয়।
গাজার উত্তরাঞ্চলীয় একটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ গুরাব এএফপিকে বলেন, ত্রাণবাহী ট্রাক পৌঁছানোর অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপর সরাসরি গুলি চালিয়েছে দখলদার বাহিনী।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা এএফপির এক সংবাদকর্মী বলেছেন, তিনি কয়েকটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন। গুলিবিদ্ধ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকেও দেখেছেন তিনি।
তবে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া মানুষের ওপর ফাঁকা গুলি ছোড়ার খবরটি অস্বীকার করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গাজা উপত্যকার একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে তা বিভ্রান্তিমূলক।’
বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনী আরও বলেছে, তারা ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে। তবে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় স্থলপথে ত্রাণ পৌঁছানোর সুযোগ সীমিত। এমন অবস্থায় কিছু কিছু দেশ গাজা উপত্যকার মানুষদের জন্য ত্রাণ পৌঁছানোর বিকল্প পথ হিসেবে আকাশপথ ও সাগরপথ ব্যবহার করছে। উড়োজাহাজ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ ফেলা হচ্ছে।
স্পেনের ত্রাণবাহী জাহাজ ওপেন আর্মস গাজার মানুষদের জন্য প্রায় ২০০ টন খাবার নিয়ে রওনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মেরিনট্রাফিক ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সাইপ্রাস থেকে রওনা হওয়া জাহাজটি ইসরায়েল উপকূলের কাছাকাছি আছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, অক্সফামসহ ২৫টি সংস্থার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থলপথে সরবরাহ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আকাশ ও সমুদ্রপথ ‘কোনো বিকল্প’ হতে পারে না।