গাজা উপত্যকার বড় শহরগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার গাজায় ইসরায়েলের হামলার দুই মাস পূর্ণ হয়েছে। সেদিনই বড় ধরনের সংঘাতে প্রাণ গেছে এই ফিলিস্তিনিদের।
ইসরায়েলি টিভির ফুটেজে দেখানো হয়েছে, গাজার রাস্তায় তাঁদের হাতে বন্দী কয়েক হামাস সদস্য মাথা নত করে বসে আছেন। তবে রয়টার্স এর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
তবে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কয়েকজন বলেছেন, টিভিতে যাঁদের দেখানো হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে হামাস বা অন্য কোনো দলের কোনো যোগাযোগ নেই।
গাজার বাসিন্দারা বলছেন, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরের পূর্ব দিকে বড় ধরনের লড়াই চলছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজার কেন্দ্রে দেইর আল-বালাহ এলাকায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল বলেছে, তাদের বাহিনী খান ইউনিসে বেশ কয়েক বন্দুকধারীকে হত্যা করেছে। তাঁদের মধ্যে দুজন সুড়ঙ্গের মধ্য থেকে গুলি চালাচ্ছিলেন বলে তাদের দাবি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন রয়টার্সকে বলেছেন, টিভির ফুটেজে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা নির্দোষ। ইসরায়েলি বাহিনী তাঁদের একটি বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসেছে। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে তাঁর ভাই মাহমুদ (৩২), তাঁর ছেলে ওমর (১৩), আরেক ভাতিজা আবুদ (২৭), তাঁর ৭২ বছর বয়সী বাবা ও আরও অনেক স্বজন রয়েছেন বলে জানান তিনি।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, তাদের বাহিনীর সঙ্গে হামাসের লড়াই চলছিল। লড়াই চলাকালে সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে ও কয়েকটি বাড়ি থেকে তাঁরা বেরিয়ে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে কারা হামাসের সঙ্গে জড়িত আর কারা জড়িত নন, তা যাচাই করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। টিভির ফুটেজ নিয়ে সরাসরি কিছু না বলে তিনি জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন শতাধিক হামাসকে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তাঁদের অনেকেই গত ২৪ ঘণ্টায় আত্মসমর্পণ করেছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ১৭০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার মানুষ। ইসরায়েলের হিসাব অনুসারে হামাসের হামলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন। ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে।