গাজার রাফা এলাকায় ইসরায়েলের হামলায় আহত শিশুদের উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা
গাজার রাফা এলাকায় ইসরায়েলের হামলায় আহত শিশুদের উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা

অসহনীয় পরিস্থিতিতে রয়েছে গাজাবাসী: জাতিসংঘের মুখপাত্র

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার মুখে ‘অসহনীয়’ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দারা। বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত ভবন বা শরণার্থীশিবিরে বসবাস করতে হচ্ছে তাঁদের। গাজাবাসী এখন খুবই শোচনীয় অবস্থায় জীবন যাপন করছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যগাজা থেকে উপত্যকাটির এমন চিত্র তুলে ধরেছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউর কর্মকর্তা লুইস ওয়াটারিজ। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থান করা সাংবাদিকদের গতকাল শুক্রবার এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজা উপত্যকা ‘ধ্বংস’ হয়ে গেছে।

চার সপ্তাহ বাইরে থাকার পর গত বুধবার গাজায় খান ইউনিস এলাকায় ফেরেন ওয়াটারিজ। তাঁর ভাষ্যমতে, এ সময়ে উপত্যকার পরিস্থিতির ‘উল্লেখযোগ্য অবনতি’ হয়েছে। এতে তিনি হতবাক হয়ে পড়েছিলেন উল্লেখ করে ওয়াটারিজ বলেন, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই, আগামীকাল পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হবে।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে উপত্যকাটিতে এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৮৩৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৮৫৮ জন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

হামলার মুখে পালাল ৮০ হাজার গাজাবাসী

জাতিসংঘের জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রমবিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের (ওসিএইচএ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার গাজার উত্তরাঞ্চলের শুজাইয়া এলাকায় স্থল অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। সাধারণ মানুষকে অবিলম্বে শুজাইয়া এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

ওসিএইচএর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজার ৭৮ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর আগে সেখানে ২৩ লাখ মানুষের বসবাস ছিল। গত ১ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত উত্তর গাজায় ১০১টি মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা করেছিল ওসিএইচএ। তবে ইসরায়েল তাদের মাত্র ৪৯টি কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা করেছে।

লেবাননে হামলা হলে ব্যবস্থা নেবে ইরান

এদিকে গাজা যুদ্ধ ঘিরে শুরু থেকে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে আসছিল ইসরায়েল ও লেবাননের ইরানপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। সম্প্রতি এই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে। ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালানোর হুমকিও দিয়েছে। এরই মধ্যে গতকাল ইরান সতর্ক করে বলেছে, লেবাননে হামলা হলে ইরানের সব ‘প্রতিরোধ বাহিনী’ ও মিত্ররা ইসরায়েলকে মোকাবিলা করবে। ইরানের এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।