ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও জর্ডান সীমান্তের একটি ক্রসিংয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে তিন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। রোববার এ ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, হামলাকারী জর্ডানের আল-কারামেহ শহর থেকে একটি ট্রাক করে রোববার সকালে অ্যালেনবি সেতু ক্রসিংয়ে আসেন। এরপর সীমান্ত প্রহরীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বন্দুকধারীকে গুলি করে হত্যা করেছেন। ট্রাকটিতে কোনো বিস্ফোরক ছিল কি না, তা তাঁরা খতিয়ে দেখেছেন।
জর্ডান জানায়, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে। ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এমন একটি জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে জর্ডানের ট্রাকগুলো মালামাল খালাস করে। এই ঘটনার পর দুই দিক থেকেই ক্রসিংটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিহত তিনজনই ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রহরী। তবে তাঁরা ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বা পুলিশের সদস্য নয়।
জর্ডানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ঘটনার সময় মালামাল খালাসের জায়গা থেকে জর্ডানের অন্তত দুই ডজন ট্রাকচালককে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
ঘটনার পর জর্ডানের সঙ্গে ইসরায়েলের সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
অ্যালেনবি সেতু ক্রসিং বাদশা হোসেইন সেতু নামেও পরিচিত। এটা পশ্চিম তীর ও জর্ডানের মধ্যে বৈধ পারাপারের একমাত্র পথ। তা ছাড়া জর্ডান থেকে থেকে পশ্চিম তীরে ঢোকার এটিই একমাত্র পথ, যেটি ইসরায়েলের ভেতর দিয়ে যায়নি।
এই ঘটনার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে ইসরায়েলের জন্য ‘একটি কঠিন দিন’ আখ্যায়িত করেছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে তিনি ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
হামাস এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এটিকে গাজা যুদ্ধের ‘প্রাকৃতিক জবাব’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে পশ্চিম তীরে এখন পর্যন্ত ৬০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে।
একই সময়ে সেখানে সহিংসতায় অন্তত ১৮ জন ইসরায়েলি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে বলে জাতিসংঘের তথ্য। তবে এই পরিসংখ্যানে গত ১১ আগস্টের পর থেকে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
গত সপ্তাহে পশ্চিম তীরে বৃহত্তম উদ্বাস্তু শিবির জেনিন শহর থেকে নয় দিনের অভিযান শেষে সেনা প্রত্যাহার করে ইসরায়েল। এই এলাকাটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। এখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বসবাস করে।