ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি খুব সন্নিকটে। গতকাল রোববার আঞ্চলিক একটি সূত্র সিএনএনকে এ কথা বলেছে। ইসরায়েলি হামলা জোরদার হওয়ায় লেবাননে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহতভাবে বাড়ছে।
গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে লেবাননে হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। সিএনএনের দেওয়া তথ্যমতে, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে ওই সময়ের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে যুদ্ধবিরতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
আঞ্চলিক সূত্রটি ইঙ্গিত দিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য দুই পক্ষ অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক কাছাকাছি চলে এসেছে। তবে এখনো তা পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, মধ্যস্থতাকারীদের এখনো কোনো সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক মুখপাত্র সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমরা ওই পথেই (যুদ্ধবিরতি) এগোচ্ছি। তবে এখনো কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দেওয়া ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছে হিজবুল্লাহ। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আশা জাগাচ্ছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হয়। তখন থেকেই হামাস ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় হিজবুল্লাহ। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র হয়ে ওঠে। ইসরায়েল লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে এবং হিজবুল্লাহর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করে। নিহত হন হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন এবং সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।
একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে মার্কিন বিশেষ দূত আমোস হোচেস্টাইন চলতি সপ্তাহে আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। গতকাল সিএনএনের বিশ্লেষক বারাক রাভিড একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, গত শনিবার হোচেস্টাইন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, ইসরায়েল যদি আগামী দিনগুলোয় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সাড়া না দেয়, তাহলে তিনি মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসবেন।
এদিকে গতকাল দিনের শুরুতে ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন নেতানিয়াহু।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল হামলা জোরদার করার পর লেবাননে ৩ হাজার ৭২ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকই বেশি। আহত হয়েছেন ১৩ হাজার ৪২৬ জন।