ইসরায়েলি হামলায় স্ত্রী-সন্তান হারানো সেই আল-জাজিরার সাংবাদিক কাজে ফিরলেন

সম্প্রতি মেয়ের মরদেহ কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আল-জাজিরার সাংবাদিক ওয়ায়েল দাহদুহ। আল আকসা হাসপাতাল, গাজা, ফিলিস্তিন
ছবি: এএফপি ফাইল ছবি

কদিন আগেই গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় স্ত্রী-সন্তানকে হারিয়েছেন আল–জাজিরার সাংবাদিক ওয়ায়েল আল-দাহদুহ। তবে সে শোক সামলে দ্রুত কাজে ফিরেছেন তিনি। গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আবারও সংবাদ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন।

১৩ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চল খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিলে দাহদুহর স্ত্রী-সন্তানেরা নিজেদের বাড়ি ছেড়ে গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেখানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তাঁর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও নাতি নিহত হন।

দাহদুহ বলেছেন, গাজায় আল–জাজিরার ব্যুরোপ্রধান হিসেবে যত দ্রুত সম্ভব কাজে ফেরাটা তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

এই সাংবাদিক বলেন, ‘যন্ত্রণা আর ক্ষত সত্ত্বেও আমার মনে হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ক্যামেরার সামনে ফিরে আসা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া আমার দায়িত্ব। আপনারা দেখছেন, সব জায়গায় গোলাগুলি চলছে। বিমান ও গোলা হামলা চালানো হচ্ছে। আর তা ক্রমাগত বাড়ছে।’

যে বিমান হামলায় দাহদুহর স্ত্রী–সন্তান নিহত হয়েছেন, সে একই ঘটনায় আরও ২১ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

ঘটনার সময় দাহদুহ গাজা পরিস্থিতির সরাসরি সম্প্রচারের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এর মধ্যেই তিনি পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর খবর পান। পরে টিভিতে প্রচারিত ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, দেইর আল বালাহর একটি হাসপাতালে ঢুকছেন দাহদুহ। সেখানকার মর্গে তাঁর ছেলের লাশ রাখা।

সন্তানের রক্তাক্ত লাশের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে দাহদুহ বলতে থাকেন, ‘তারা কি আমাদের প্রতিশোধ আমাদের সন্তানদের ওপর নিয়েছে?’

হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় আল–জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে তা পরিষ্কার। শিশু, নারী ও বেসামরিকদের লক্ষ্য করে পরপর হামলা চালানো হয়েছে। আমি এ ধরনেরই একটি হামলা নিয়ে ইয়ারমুক থেকে সংবাদ প্রচার করছিলাম। তখন নুসেইরাতসহ বেশ কিছু এলাকায় হামলা চালায় ইসরায়েল।’

৫৩ বছর বয়সী এ সাংবাদিক আবারও কাজে ফিরেছেন। আবারও তিনি গাজার মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরবেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের দুঃসহ যন্ত্রণার কথা বিশ্ববাসীকে জানাবেন।