গাজার দক্ষিণের শহর রাফায় গত সপ্তাহ থেকে অভিযান জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর পর রাফা থেকে অন্তত আট লাখ ফিলিস্তিনি জীবন বাঁচাতে পালিয়েছেন, উদ্বাস্তু হয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।
ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের বারবার বাস্তুচ্যুতির ঘটনায় সমালোচনা করেন।
ফিলিপ লাজারিনি বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ফিলিস্তিনিরা বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তাঁরা বারবার পালাতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু নিরাপদ আশ্রয় পাননি। এমনকি জাতিসংঘ পরিচালিত নানা আশ্রয়কেন্দ্রেও তাঁরা নিরাপদ ছিলেন না।
এদিকে গতকাল শনিবার শুধু রাফা নয়, গাজাজুড়ে তুমুল লড়াই হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় এদিন কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল দিনের শুরুতে বলেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৮৩ জনের প্রাণ গেছে।
দিনের পরবর্তী অংশে আল–জাজিরা আরবির সংবাদকর্মী ইসমাইল আলঘৌর জানান, গাজার উত্তরাঞ্চলের কামাল আদওয়ান হাসপাতালে ৪০ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি বোমা হামলায় তাঁরা নিহত হন। অন্য একটি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
গাজার ঐতিহাসিক আটটি শরণার্থীশিবিরের সবচেয়ে বড় জাবালিয়া শরণার্থীশিবির। বাসিন্দারা বলেন, জাবালিয়ার কেন্দ্রস্থলে পৌঁছে গেছে ইসরায়েলি সাঁজোয়া যান। সামনে অগ্রসর হওয়ার পথে সব বাড়িঘর ও দোকানপাট গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বুলডোজারগুলো।
গাজায় হামলা শুরুর প্রথম দিকের মাসগুলোয় জাবালিয়াকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধামুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজার যোদ্ধারা যাতে আবার সংগঠিত হতে না পারেন, সে জন্য আবার জাবালিয়ায় অভিযান শুরু করছে তারা।
গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা শুরুর সাত মাস পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে গাজা উপত্যকাজুড়ে হামাসের হাতে এখনো শতাধিক ইসরায়েলি জিম্মি আছে।