মালামাল নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছে মধ্য গাজার ফিলিস্তিনি পরিবারটি
মালামাল নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছে মধ্য গাজার ফিলিস্তিনি পরিবারটি

যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ: জাতিসংঘ

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গত বছরের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজা উপত্যকার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ অন্তত একবারের জন্য হলেও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রমবিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের (ওসিএইচএ) ফিলিস্তিন অঞ্চলের প্রধান আন্দ্রেয়া ডি ডোমিনিকো গতকাল বুধবার বলেন, গাজার প্রায় ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডোমিনিকো সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের অনুমান, অক্টোবরের পর থেকে দুর্ভাগ্যবশত গাজা উপত্যকার প্রতি ১০ জন বাসিন্দার ৯ জনই অন্তত একবারের জন্য বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। কেউ কেউ ১০ বার পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।’

বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছিল, আগে গাজায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ। পরে আমরা রাফায় (গাজার দক্ষিণের শহর) আক্রমণ হতে দেখেছি। সেখান থেকে আরও মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এরপর উত্তরাঞ্চলেও হামলা হয়েছে। এ অঞ্চল থেকেও মানুষ অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।’

ইসরায়েলের হামলা বারবারই গাজার লোকজনকে তাঁদের বাসস্থান বদলাতে বাধ্য করেছে বলে উল্লেখ করেন ডোমিনিকো। তিনি আরও বলেন, গাজায় বাস্তুচ্যুত হওয়া ১৯ লাখ মানুষের বাইরেও অনেকে আছেন, যাঁরা নানা ধরনের ভয়-আতঙ্ক ও দুর্দশার মধ্যে কাটাচ্ছেন। প্রতিদিনই তাঁরা স্বপ্ন ও আশাহীন হয়ে পড়ছেন।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের মুখে গাজা উপত্যকা কার্যত দুই ভাগে (অবরুদ্ধ উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল) ভাগ হয়ে গেছে। ওসিএইচএর হিসাব অনুযায়ী, উপত্যকাটির উত্তরাঞ্চলে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ মানুষের বসবাস। তাঁরা দক্ষিণে যেতে পারেন না।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আনুমানিক ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ গাজা থেকে রাফা ক্রসিং দিয়ে মিসরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। গত মে মাসের শুরুর দিকে এ সীমান্তপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ডোমিনিকো জানান, এসব মানুষের একটি অংশ মিসরেই আছেন। বাকিরা অন্যত্র চলে গেছেন।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি জানায়, হামাসের ওই হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৯৫ জন নিহত হন। এ ছাড়া হামাস যোদ্ধারা ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, জিম্মিদের মধ্যে ১১৬ জন এখনো গাজায় আছেন। মারা গেছেন ৪২ জন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।