অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত পবিত্র আল–আকসা মসজিদে অমুসলিম ও পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসরায়েল। এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে শুধু পবিত্র রমজান মাস পর্যন্ত। বুধবার ইসরায়েল এই ঘোষণা দেওয়ার আগে দখলকৃত পশ্চিম তীরে সেনাদের গুলিতে দুই ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী নিহত হন।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ও সহিংসতা চলছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনারা আল–আকসা মসজিদের ভেতর ঢুকে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালান। এর মধ্য দিয়ে সেখানকার উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নেয়। এরই প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এবং লেবানন ও সিরিয়া থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা করা হয়। এর জবাবে গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
কয়েক দিন ধরে চলা সহিংসতার জেরে বুধবার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৈঠক শেষে তিনি জানান, রমজান মাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো অমুসলিমকে আল–আকসায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ অবশ্য এখনো কিছু জানায়নি।
তবে কট্টর ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী বেন গাভির অমুসলিমদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেছেন। বেন গাভির বলেন, ‘যখন সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর আঘাত করে, তখন শত্রুদের কাছে আত্মসমর্পণ না করে আরও শক্তি নিয়ে আঘাত করা উচিত।’
মুসলিম ও ইহুদি, দুই ধর্মাবলম্বীদের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত আল–আকসা মসজিদ ঐতিহাসিকভাবে বিবাদের ইস্যু। তবে সমঝোতা অনুসারে শুধু মুসলিমরা মসজিদের ভেতরে নামাজ পড়তে পারবেন। কিন্ত অমুসলিমরা এর ভেতরে যেতে পারবেন না, শুধু আল–আকসা প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করতে পারবেন। তবে বিভিন্ন ছোট ছোট ইহুদী গোষ্ঠী এ নিয়মের তোয়াক্কা না করে ভেতরে ঢুকছেন। দিন দিন এর সংখ্যা বাড়ছেই।এতে সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে।
এক বছর ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সহিংসতা বেড়েছে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে আল–আকসাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, বুধবার দুজন ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী তাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল সেনাবাহিনীর দাবি, নাবলুস শহরে ওই দুই বন্দুকধারী একটি গাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর তল্লাশিচৌকি লক্ষ করে গুলি করতে শুরু করে। তারা পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই বন্দুকধারী নিহত হয়েছেন।