হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জ এল-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জ এল-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা

ভিডিও বার্তা প্রকাশ

ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হামাস

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটির সামরিক শাখা গতকাল শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে। তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর খবরে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এক ভিডিও বার্তায় হামাসের ইজ্জ এল-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা বলেছেন, ‘আমরা আমাদের জনগণের ওপর আগ্রাসন বন্ধ করার বিষয়ে পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে শত্রুকে নিঃশেষ করতে আমরা তাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ করতে প্রস্তুত।’

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে, সে বিষয়ে তারা সব প্রকাশ করছে না বলে উল্লেখ করেন আবু উবায়দা।

আবু উবায়দা ঘোষণা করেন, আল-কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা গত ১০ দিনে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের এক শ সামরিক যান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছেন।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে, সে বিষয়ে তারা সব প্রকাশ করছে না বলে উল্লেখ করেন আবু উবায়দা।

কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র দাবি করেন, রাফা শহরের পূর্বাঞ্চলে এই ব্রিগেডের যোদ্ধারা শত্রুপক্ষের (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) ওপর কঠিন আঘাত হেনেছেন।

গত সপ্তাহে গাজার সর্বদক্ষিণের শহর রাফায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় ইসরায়েলের হামলার মুখে বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষ পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন এখানে। শহরটিতে এখন ১৫ লাখের বেশি গৃহহীন ফিলিস্তিনি বসবাস করছেন। ইতিমধ্যে রাফা ক্রসিংয়ের ফিলিস্তিন অংশ দখল করে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বাইরে থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এ ক্রসিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল হয়ে বাকি বিশ্বে যাওয়ারও একমাত্র পথ এটি।

হামাসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কুচকাওয়াজে সশস্ত্র যোদ্ধারা। গাজা নগর, গাজা, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২

দশকের পর দশক ইসরায়েলি দখলদারির শিকার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সদস্যরা গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫৩ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান। ইসরায়েলের দাবি, এ হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য, ওই দিন থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন ৭৯ হাজার ২০০ জনের বেশি।

গাজায় সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের যুদ্ধে উপত্যকাটির বড় অংশ বিধ্বস্ত হয়েছে। খাবার, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের প্রচণ্ড ঘাটতিতে ভুগছে লাখ লাখ মানুষ।

এ অবস্থায় গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে দ্য হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) চারটি আবেদন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এসব আবেদনে গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার, উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা, সেখানে মানবিক সহায়তা সরবরাহের নিশ্চয়তা এবং রাফায় ইসরায়েলির বাহিনীর অভিযান বন্ধে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।