গোলাপের আকারে তৈরি জাদুঘর। কাতারের মরুভূমির মধ্যে অবস্থান। প্রায় ১০ বছর ধরে জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়। খরচা হয়েছে ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ সপ্তাহেই খুলে দেওয়া হয়েছে জাদুঘরটি।
স্থানীয় সময় গত বুধবার জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে জাদুঘরটির উদ্বোধন করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার জনসমক্ষে এটি খুলে দেওয়া হয়। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, কুয়েতি আমির শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ এবং ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড ফিলিপ ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন।
জাদুঘরের স্থপতি ফ্রান্সের জেন নওভেল। প্রখ্যাত এই স্থপতি টুইটে বলেন, এই স্থাপনা ঐতিহ্যকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।
এএফপির খবরে জানা যায়, জাতীয় জাদুঘরের ভবনের নকশা চোখে পড়ার মতো। প্রবেশপথে ১১৪টি ভাস্কর্য রয়েছে। ৯০০ মিটার লম্বা হ্রদ রয়েছে। আঁকাবাঁকা ছাদ রয়েছে। আছে ৭৬ হাজার সুড়ঙ্গ। ৩ হাজার ৬০০ আলাদা আকার ও নকশার সুড়ঙ্গ এগুলো।
জাদুঘরের ভেতরে ১ হাজার ৫০০ মিটারেরও বেশি প্রশস্ত জায়গা রয়েছে। দর্শকদের জন্য রাখা আছে উনিশ শতকের কার্পেট। ওই কার্পেট ১৫ লাখ উপসাগরীয় মুক্তাখচিত। রয়েছে ১৮ শতকেরও আগের প্রাচীন কোরআন শরিফ।
জাদুঘরের পরিচালক শেখ আমনা বিনতে আব্দুলআজিজ বিন জসিম আল-থানি বিবৃতিতে বলেন, এটা এমন এক জাদুঘর, যা কাতারের জনসাধারণের কথা বলে। আধুনিক কাতারের প্রতিষ্ঠাতার ছেলে শেখ আবদুল্লাহ বিন জসিম আল-থানির পুরোনো রাজপ্রাসাদের পাশে জাতীয় জাদুঘরটি অবস্থিত। জাদুঘর প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রাসাদটি মেরামত করা হয়েছে।
কাতারের বেদুইনদের ইতিহাস এবং ধনীদের বর্তমান অবস্থার চিত্র জাদুঘরে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সম্পদ সম্পর্কে ধারণাও দেওয়া হয়েছে।
স্থাপত্য ও সাংস্কৃতিক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নতুন জাদুঘরটি কাতারের রাজনৈতিক পরিচয়ও বহন করে।
উপসাগরীয় এলাকায় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবেও কাতারের এই জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। আরবের উন্নয়নের নিদর্শন হিসেবে জাদুঘরটি নির্মিত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাদুঘরটি ২০১৬ সালে উন্মুক্ত করার কথা ছিল। দেরিতে উদ্বোধন হওয়ায় স্বকীয়তা আরও ভালোভাবে প্রকাশের সুযোগ পেয়েছে কাতার।
২০১৭ সালের জুন মাস থেকে প্রতিবেশী সাবেক মিত্রদেশগুলো কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে কাতারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সন্ত্রাসকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনে কাতারের বিরুদ্ধে। তবে কাতার এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।