বাশার আল-আসাদ চতুর্থ দফায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। সিরিয়ার সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সিরিয়ার পার্লামেন্টের স্পিকার গতকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেন যে বাশার আল-আসাদ ৯৫ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।
গৃহযুদ্ধকবলিত সিরিয়ার এই নির্বাচন নিয়ে বাশার আল-আসাদের প্রকৃত বিরোধীপক্ষের পাশাপাশি পশ্চিমারাও প্রশ্ন তুলেছে। তাদের অভিযোগ, এই নির্বাচন মোটেই অবাধ ও স্বচ্ছ হয়নি। এই নির্বাচনে জালিয়াতি করা হয়েছে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। এই গৃহযুদ্ধে দেশটির ৩ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ অবসানের কোনো লক্ষণ ১০ বছর পরও দেখা যাচ্ছে না।
গৃহযুদ্ধ চলার মধ্যেই বাশার আল-আসাদ দুবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হলেন। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বাশার-আল আসাদ ৮৮ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসনের মেয়াদ আরও দীর্ঘায়িত হলো।
গত বুধবার সিরিয়ার সরকারনিয়ন্ত্রিত এলাকায় নির্বাচনে কথিত ভোট হয়। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখানো হয়।
বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল্লাহ সাল্লুম আবদুল্লাহ। অপরজন কথিত বিরোধী নেতা মাহমুদ মেরি।
ভোটের প্রাক্কালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সিরিয়ার বিরোধী রাজনীতিকদের একটি অংশ এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করে। বাশার আল-আসাদ যে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে দেশটির খুব কম লোকেরই মধ্যেই সন্দেহ ছিল।
ভোটের দিন সিরিয়ার সরকারনিয়ন্ত্রিত এলাকায় বাশার আল-আসাদের সমর্থনে ব্যাপক পোস্টার, ব্যানার দেখা যায়। এতে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগেই হাজারো মানুষ সিরিয়ার বিভিন্ন শহরের রাজপথে নেমে আসেন। তাঁদের হাতে ছিল সিরিয়ার জাতীয় পতাকা ও বাশার আল-আসাদের ছবি। ফলাফল ঘোষণার পর জনতা আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে বলেও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।