সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি সৌদি আরামকো গত বছর দ্বিগুণ মুনাফা করেছে। কোম্পানিটি এবার জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। আগামী পাঁচ থেকে আট বছর জ্বালানি উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকেই কোম্পানিটি বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
চাহিদার চেয়ে তেল ও গ্যাসের সরবরাহ কম হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিশ্বে জ্বালানির দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় জ্বালানির বিকল্প খুঁজতে বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখনই এ ঘোষণা দিল সৌদি আরামকো।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির উচ্চমূল্য নিয়ে চিন্তিত বিভিন্ন দেশের নেতারা সৌদি আরামকোর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন।
গত সপ্তাহে সৌদি আরব সফর করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রিয়াদকে স্বল্পমেয়াদে হলেও বিশ্ববাজারে অতিরিক্ত তেল সরবরাহের আহ্বান জানান।
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজের (ওপেক) সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদক দেশ সৌদি আরবের এ ঘোষণায় বিশ্বে জ্বালানির দাম কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য এখন ১৪ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
করোনাভাইরাস মহামারিকালে জ্বালানির বাজার ছিল অস্থিতিশীল। তবে হঠাৎ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি ফেরায় চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ সংকট তৈরি হয়।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালে বিশ্ব অর্থনীতি যখন মন্দার মুখে, তখন সৌদি আরামকোর মুনাফা উল্লেখ করার মতো কমে যায়। কিন্তু মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে গতি ফেরায় ২০২১ সালে জ্বালানির মূল্য এক লাফে অনেকটা বাড়ে। এতে ওই বছর দ্বিগুণ মুনাফা করেছিল সৌদি আরামকো।
সৌদি আরামকো বলেছে, এ বছর মূলধন ব্যয় বাড়িয়ে ৪৫ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করার পরিকল্পনা করছে, গত বছর যা ছিল প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার।
কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করবে তারা। এখন দৈনিক গড়ে এক কোটি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করছে। এ ছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ৫০ শতাংশ বাড়ানোরও ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরামকো।