আল–আকসা প্রাঙ্গণে ফের হামলা, আহত শতাধিক

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি বাহিনীর অবস্থান। ১০ মে
ছবি: রয়টার্স

পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আজ সোমবার ভোরে আবারও ইসরায়েলি বাহিনী ঢুকে পড়েছে। সেখানে তারা ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও বোমা ছুড়েছে। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়।

শুক্রবার থেকে সেখানে কয়েক দফায় ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকা থেকে ৭০টির বেশি ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদের ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তা নিয়েই সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা শুরু হয়।

ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের একটি সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন ইসরায়েলি আদালত। এর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টে আপিল শুনানিকে সামনে রেখে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে গতকাল রোববার ওই মামলার শুনানি পিছিয়ে গেছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন তারিখ দেওয়া হবে।

আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। তবে এটি ইহুদিদের কাছেও একটি পবিত্র স্থান, যাকে তারা টেম্পল মাউন্ট হিসেবে জানেন।

২১৫ জন আহত: রেড ক্রিসেন্ট

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ২১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ১৫৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আহত এক ফিলিস্তিনিকে উদ্ধার করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ১০ মে

ফিলিস্তিনি এক চিকিৎসক আল-জাজিরাকে বলেন, একজন মুসল্লির ঘাড়ে রাবার বুলেটের আঘাত লেগেছে। ঘটনার সময় মসজিদের ভেতর আটকা পড়া আবদুল্লাহ ইদ্রিস নামের এক মুসল্লি বলেন, মসজিদ প্রাঙ্গণ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। কাঁদানে গ্যাসের কারণে তাঁরা শ্বাস নিতে পারছিলেন না। অনেকে কাশছিলেন। খোলা বাতাসের জন্য মসজিদের জানালার কাছে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকদেরও আসতে দেওয়া হচ্ছে না।

ইসলামিক ওয়াকফের এক কর্মকর্তা শেখ রিয়াদ দা’না আল-জাজিরাকে বলেন, তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর মারধরের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার পরিচয়পত্র দেখানোর পরও তারা আমাকে সমানে মাটিতে ফেলে লাথি দিচ্ছিল। এরপর তারা আল-আকসা প্রাঙ্গণ থেকে আমাকে বাইরে ছুড়ে ফেলে।’

৬ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আহত

ইসরায়েলি বাহিনীর এই হামলার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে ছয়জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে। তাঁরা কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।

আল আকসা প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে মাটিতে পড়ে যান এক ক্যামেরা অপারেটর। ১০ মে

এ ছাড়া ফাতিমা আল-বাকর নামে আরেকজন সাংবাদিক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন।

ইসরায়েলি জাতীয়তাবাদীরা তাদের বার্ষিক জেরুজালেম ডে ফ্ল্যাগ উপলক্ষে শোভাযাত্রা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে আল-আকসা প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটল।

আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে এক ফিলিস্তিনিকে আটক করে ইসরায়েলি পুলিশ। ১০ মে

জেরুজালেমে ১৯৬৭ সালের এই দিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে উদ্‌যাপন করতে দিবসটি পালন করে ইহুদিরা। তবে ফিলিস্তিনিরা ইহুদিদের দিনটি উদ্‌যাপনকে উসকানিমূলক বলে মনে করে।