ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ‘খেলাফত’ শেষ হয়ে গেছে। সিরিয়ায় কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এমন ঘোষণা দিয়েছে। আইএসের সর্বশেষ ঘাঁটি ছিল সিরিয়ার বাহুজ এলাকায়। এরই মধ্যে তা দখলমুক্ত করে সেখানে বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছে এসডিএফ।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আইএসের খেলাফতের সমাপ্তি টানার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই উল্লাসে মেতে উঠেছে সিরিয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে উদ্যাপন। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, খেলাফত শেষ হলেও সহিংসতার আশঙ্কা শেষ হয়ে যায়নি। এখনো আইএস বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি। কারণ, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস ছড়িয়ে পড়েছে নাইজেরিয়া থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত। আর সিরিয়াতেও একেবারে নিকেশ হয়নি আইএস, বিক্ষিপ্তভাবে টিকে আছে এর অস্তিত্ব।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলেছে সিরিয়ায়। অবশেষে সেখানের আইএস উচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলো। গতকাল রাতেই অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছিল যে, সিরিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে আইএস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। কিন্তু এর পরপরই এসডিএফ জানায়, যুদ্ধ নাকি তখনো চলছে! আজ শনিবার এসডিএফ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে যে, আইএসের খেলাফত শেষ।
চলতি মার্চ মাসের শুরু থেকে এসডিএফ জোট আইএসের ওপর চূড়ান্ত আক্রমণ শুরু করে। এ সময় সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলের বাহুজে আইএসের শক্ত ঘাঁটি অবশিষ্ট ছিল। ওই এলাকায় জঙ্গিদের পাশাপাশি অনেক বেসামরিক মানুষও ছিল। এ কারণে হামলার মাত্রা কিছুটা কমাতে হয়েছিল।
আইএসের বিরুদ্ধে বিজয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে এসডিএফের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মুস্তাফা বালি বলেছেন, ‘আইএসের ১০০ ভাগ পরাজয় হয়েছে।’ এসডিএফের জেনারেল কোবানি বলেছেন, আইএসের গোপন দলগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। তিনি বলছেন, এই গোপন দলগুলো মধ্যপ্রাচ্য ও পুরো বিশ্বের জন্য বিশাল হুমকি।
এদিকে আইএসের খেলাফত শেষ হওয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাঁখো বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে তাঁর দেশের অন্যতম হুমকি দূর হলো। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেছেন, আইএসের হুমকি থেকে ব্রিটিশ জনগণ ও অন্যান্যদের রক্ষা করতে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর।