নিউজিল্যান্ডে ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল আঘাত হানার পর ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দী মানুষদের অনেকে ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ভূমিধস হচ্ছে। এমন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে দেশটির ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলো।
এর আগে ২০১১ সালে ভূমিকম্প এবং ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডবাসীর জন্য বিশেষ করে আপার নর্থ আইল্যান্ডের বাসিন্দাদের জন্য আজকের রাতটি দীর্ঘ। অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অনেক বাড়িঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে, দেশ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।’
নর্থ আইল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের কাছের অকল্যান্ড থেকে ১০০ কিলোমিটার পূর্বে ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঝড়টি পূর্ব-দক্ষিণ পূর্ব দিকে সরে গিয়ে উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
জরুরি ব্যবস্থাপনামন্ত্রী কিয়েরান ম্যাকঅ্যানাল্টি বলেছেন, নিউজিল্যান্ডে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আরও বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো বাতাস হতে পারে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমাগত সরতে থাকায় আপার সাউথ আইল্যান্ডেও আবহাওয়া পরিস্থিতি বাজে রূপ ধারণ করতে পারে।
সমুদ্রতীরবর্তী বসতিগুলো ফাঁকা করেছে। নদীগুলোর পানি উপচে পড়ায় কাছাকাছি এলাকায় বসবাসরত মানুষদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হচ্ছে। সড়কগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। মুঠোফোন সেবা ব্যাহত হচ্ছে। কিছু কিছু শহর যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
হিপকিন্স বলেন, কতসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত বা আহত হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। এখন পর্যন্ত কারও মৃত্যুর খবর জানা যায়নি।
ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য পার্লামেন্ট অধিবেশন বসবে। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি থাকবে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, লোকজন বিভিন্ন ভবনের ছাদে বসে আছে। ভবনগুলোর চারপাশে বন্যার পানি। বিভিন্ন জায়গায় ভূমিধস হচ্ছে। সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।