বিচিত্র

জুতা পড়ে গেল শিশুটির, ফিরিয়ে দিল হাতি

শিশুটিকে জুতা ফিরিয়ে দিচ্ছে সেই হাতি
সংগৃহীত

লোকালয়ে এসে হাতির পালের ধ্বংসযজ্ঞের খবর ও ছবি সংবাদমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়। তবে এবার একটি হাতি গণমাধ্যমে এসেছে বিচিত্র এক ঘটনার জন্ম দিয়ে।

ঘটনাটি ঘটেছে চীনের একটি চিড়িয়াখানায়। এক শিশুর জুতা হাতির থাকার জায়গায় পড়ে গিয়েছিল। সেখানে থাকা একটি হাতি শুঁড় দিয়ে সেই জুতা তুলে শিশুটিকে ফেরত দিয়েছে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাটি চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শানডং প্রদেশের ওয়েইহাই চিড়িয়াখানার। সম্প্রতি বাবা-মায়ের সঙ্গে চিড়িয়াখানাটিতে ঘুরতে গিয়েছিল এক শিশু। হাতির আবাসের সামনে ছিল শিশুটি। হঠাৎ কোনোভাবে শিশুটির একটি জুতা নিরাপত্তাবেষ্টনী গলে হাতির আবাসস্থলের ভেতরে গিয়ে পড়ে।

নিজের আবাসে শিশুটির জুতা পড়ে যাওয়ার ঘটনা চোখ এড়ায়নি সেখানে থাকা একটি হাতির। প্রাণীটি এগিয়ে এসে শুঁড় দিয়ে জুতা তুলে নেয়। এরপর নিরাপত্তাবেষ্টনীর বাইরে থাকা শিশুটির হাতে জুতাটি তুলে দেয়। পুরো ঘটনাটি ঘটে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। এই ঘটনা ভিডিও করেন পাশে থাকা একজন দর্শনার্থী। পরে ১৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে আপলোড করা হয়।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছে। ২৫ লাখের বেশিবার ভিডিওটি দেখা হয়েছে। মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, ‘সত্যি, হাতি একটি স্মার্ট প্রাণী।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘এখন পর্যন্ত টিকে থাকা সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রাণীদের একটি হাতি।’

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই হাতির নাম মাউন্টেন রেঞ্জ। এশিয়ান প্রজাতির এই পুরুষ হাতির বয়স ২৫ বছর। হাতিটি আগে থেকেই বেশ জনপ্রিয়। প্রতিদিন মাউন্টেন রেঞ্জকে দেখতে অনেক দর্শনার্থী ওয়েইহাই চিড়িয়াখানায় ভিড় জমান। চিড়িয়াখানার একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করে সংবাদমাধ্যমকে জানান, মাউন্টেন রেঞ্জ নামের হাতিটি খুব দ্রুত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। এ বিষয়ে প্রাণীটির বিশেষ দক্ষতা রয়েছে।

চিড়িয়াখানার ওই কর্মী আরও বলেন, মাউন্টেন রেঞ্জ নামের হাতিটি প্রতিদিন পানির বোতল তুলে থাকে। ওই শিশুর জুতা তুলে ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে প্রাণীটি।

এই কাজের জন্য হাতিটিকে একবেলা বিশেষ খাবার দেওয়া হয়েছে। এটা ছিল প্রাণীটির ভালো কাজের পুরস্কার, এমনটাই জানিয়েছেন চিড়িয়াখানার আরেকজন কর্মী। তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধানকারীর সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি, হাতিটির প্রিয় খাবার তরমুজ ও কলা। তাই আমরা প্রাণীটিকে পুরস্কার হিসেবে একটি তরমুজ ও বেশ কিছু কলা খেতে দিয়েছি।’