বিলকিস বানু
বিলকিস বানু

গুজরাটে বিলকিসের ধর্ষণ মামলার সেই অপরাধীদের আত্মসমর্পণ

ভারতের গুজরাটে দাঙ্গার সময় ধর্ষণের শিকার বিলকিস বানুর মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আত্মসমর্পণ করেছেন। গতকাল রোববার ১১ জন অপরাধীই গুজরাট রাজ্যের পঞ্চমহল জেলার গোধরা কারাগারে ফিরে যান। ওই কারাগারে থাকাকালেই তাঁরা মুক্তি পেয়েছিলেন।

গোধরার স্থানীয় পুলিশ আধিকারিক পিটিআইকে এ খবর নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল রাতেই সব অপরাধী জেলে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।

গুজরাটের গোধরায় ২০০২ সালে ফেব্রুয়ারিতে দাঙ্গা থেকে বাঁচতে বিলকিস বানু সপরিবার পালাচ্ছিলেন।

সে সময় তাঁর বয়স ছিল ২১। তখন তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সে সময় তিনি দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। শুধু তা–ই নয়, অপরাধীরা তাঁর শিশুকন্যাসহ পরিবারের সাতজনকে হত্যাও করেছিল।

ওই ঘটনায় অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিলেন মুম্বাইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটি গুজরাট থেকে সরিয়ে মহারাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

গুজরাট সরকার ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে আরও অনেকের সঙ্গে ওই ১১ অপরাধীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। সেই মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তামাদি হয়ে যাওয়া এক পুরোনো সরকারি নিয়মে। বিলকিসসহ অনেকেই গুজরাট সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট অপরাধীদের আবার কারাগারে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেন।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়, অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার কোনো অধিকারই গুজরাট সরকারের নেই, যেহেতু বিচার হয়েছিল মহারাষ্ট্রে। সিদ্ধান্তের অধিকারী একমাত্র মহারাষ্ট্র সরকার।

শুধু তা–ই নয়, গুজরাট সরকারকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিলেন, মুক্তির আবেদনে প্রকৃত তথ্যাদিও গোপন করা হয়েছিল। বিভ্রান্ত করা হয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন ৮ জানুয়ারি। তাতে বলা হয়েছিল, ১৪ দিনের মধ্যে অপরাধীদের গোধরা কারাগারে ফেরত যেতে হবে।

সেই সময়সীমা এক থেকে দেড় মাস বাড়াতে অপরাধীরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান। কেউ বলেছিলেন, ফসল কাটার সময় পরিবারকে সাহায্য করতে হবে, কেউ স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়েছিলেন, কেউ বা বলেছিলেন বৃদ্ধ মা–বাবাকে দেখার জন্য সময় দেওয়া হোক।

সুপ্রিম কোর্ট কোনো কারণই যুক্তিগ্রাহ্য মনে করেননি। কারাগারে ফেরত যাওয়ার পুরোনো নির্দেশই বহাল রেখেছিলেন।