টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। রোববার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে এই শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুও। তাঁর এই ভারত সফর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে।
গত নভেম্বরে ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে মালদ্বীপে ক্ষমতায় আসেন মুইজ্জু। এরপর প্রতিরক্ষা থেকে বাণিজ্য—বিভিন্ন খাতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়েছেন তিনি। বিপরীতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠেকেছে তলানিতে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয় মুইজ্জুকে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এটি তাঁর প্রথম সফরও ছিল।
নয়াদিল্লি-মালে সম্পর্ক নিয়ে জানাশোনা আছে এমন কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ভারতের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে মুইজ্জুর মোদির শপথে অংশ নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে এটাই বোঝা যাচ্ছে—ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী মালদ্বীপ। শপথের পর সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে মুইজ্জুর বৈঠকের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন তাঁরা।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর রোববার রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেন মোদি। পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশ নেন তাঁরা। সেখানে মোদির পাশেই মুইজ্জুকে বসতে দেখা গেছে।
সোমবার অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের মতো এস জয়শঙ্করের সঙ্গে মুইজ্জুও বৈঠক করেন। সেখানে কথা হয় দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে।
বৈঠক শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে জয়শঙ্কর লেখেন, ‘মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুকে নয়াদিল্লিতে আমন্ত্রণ করে আনতে পেরে আমি আনন্দিত। ভারত-মালদ্বীপ ভবিষ্যতে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার বিষয়ে আমি আশাবাদী।’
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, মুইজ্জু-জয়শঙ্কর বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘অভিন্ন মূল্যবোধ ও স্বার্থের জায়গায় দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক আরও পোক্ত করার’ ওপর জোর দিয়েছেন দুজন। আগামী বছরগুলোতে এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।
গত মাসে নয়াদিল্লিতে জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা জমির। পারস্পরিক স্বার্থ ও সংবেদনশীলতা উভয় দেশের সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করবে বলে সে সময়ও মন্তব্য করেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কের বিষয়ে জানাশোনা আছে—এমন ব্যক্তিদের একজন বলেন, ‘যেকোনো সার্বভৌম দেশের মতো মালদ্বীপেরও যেকোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের অধিকার রয়েছে। তবে তাঁদের (মালদ্বীপের নেতা) অবশ্যই এ বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট থাকতে হবে যে তাঁরা এই সম্পর্ককে কোন দিকে নিয়ে যেতে চান।’