ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আজ শুক্রবার সকালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য লোকসভায় গিয়েছিলেন। ‘মোদি’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের ঘটনায় মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার পর দিন লোকসভায় গেলেন রাহুল।
সাজা পাওয়ার পর রাহুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, সাজার কারণে রাহুলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হবে কি না, তা নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন জোর আলোচনা চলছে।
বিক্ষোভের মধ্যে লোকসভার অধিবেশন আজ দুপুর পর্যন্ত মুলতবি করার পর রাহুল চলে যান।
কেরালার ওয়েনাড লোকসভা আসনের সদস্য রাহুল। তাঁকে গতকাল দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন গুজরাটের সুরাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) এইচ এইচ ভার্মা।
সাজা ঘোষণার পর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাহুলের জামিন মঞ্জুর করেন একই আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য তাঁকে ৩০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময় পর্যন্ত রায় স্থগিত থাকবে, আর রাহুলের জামিনে থাকবেন।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০১৩ সালে এক মামলার রায়ে বলেছিলেন, কোনো মামলায় কোনো সংসদ সদস্য, বিধায়ক বা বিধান পরিষদের সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সদস্যপদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ৮ (৩) ধারা অনুসারে, যদি কোনো সংসদ সদস্য কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, আর কমপক্ষে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন, তাহলে তাঁর পদ খারিজ হবে।
ভারতের কিছু আইন বিশেষজ্ঞ বলছেন, দোষী সাব্যস্ত হওয়া ও দুই বছরের সাজার কারণে সংসদ সদস্য হিসেবে রাহুল স্বয়ংক্রিয়ভাবে অযোগ্য হয়ে গেছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সুরাট আদালতের রায়ের ভিত্তিতে রাহুলকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে লোকসভা সচিবালয়। তবে তারা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ঘোষণা দেয়নি।
তবে আরেক দল বিশেষজ্ঞ বলছেন, রাহুল যদি রায় বদলাতে পারেন, তাহলে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে অযোগ্য হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় যুদ্ধবিমান রাফাল কেনাবেচায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল কংগ্রেস। সে সময় রাহুল স্লোগান দেন, ‘চৌকিদার চোর হ্যায় (পাহারাদারই চোর)।’ একই বছর কর্ণাটকে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তোলেন, চোরদের পদবি কেন ‘মোদি’ হয়?
ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত ললিত মোদি ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পলাতক নীরব মোদির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদিকে জড়িয়ে রাহুল ওই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এরপর পূর্ণেশ মোদি নামের গুজরাট বিজেপির এক নেতা সুরাট আদালতে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।