ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার বলেন, সন্ত্রাসবাদী দৌরাত্ম্যের শেষ প্রহর শুরু হয়েছে। গত ১০ বছরে যে পরিবর্তনগুলো এসেছে, তা জম্মু–কাশ্মীরকে দেশের সমৃদ্ধিশালী অঞ্চলে পরিণত করবে।
প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেন একদা উপদ্রুত ডোডা জেলায়। পাশের জেলা কিশতোয়ারে আগের দিন শুক্রবার সেনা ও জঙ্গিদের সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের দুজন সেনাবাহিনীর জওয়ান, একজন জঙ্গি। আরেক জেলা বারামুল্লায় শনিবারের সেনা অভিযানে নিহত হন তিন জঙ্গি। প্রথম দফার ভোট ১৮ সেপ্টেম্বর। তার আগে জম্মু–কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলায় জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে গেছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিয়ানা চিরতরে শেষ হতে চলেছে।
জম্মু–কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদ, অনুন্নয়ন ও দুর্নীতির দায় মোদি বরাবরই বিরোধীদের ওপর চাপিয়ে এসেছেন। বারবার বলেছেন, ভূস্বর্গকে নষ্ট করেছে তিনটি পরিবার ও তাদের তৈরি তিন রাজনৈতিক দল। শনিবারও তাঁর ভাষণে সেই তিনি পরিবারভিত্তিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি), পিডিপি ও কংগ্রেসকে যত নষ্টের গোড়া বলে তিনি অভিহিত করেন।
মোদি বলেন, এবারের এই নির্বাচনে জনগণকে ঠিক করতে হবে তারা ওই তিন পরিবারকে বেছে নেবে না জম্মু–কাশ্মীরের যুব সম্প্রদায়ের ওপর ভরসা রাখবে। তিনি বলেন, এই তিন পরিবার চরম দুর্নীতিগ্রস্ত। সাধারণ মানুষের প্রয়োজনের দিকে তারা কখনো নজর দেয়নি। উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদের জন্মও তারা দিয়েছে। তিনি বলেন, যুব সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি জম্মু–কাশ্মীরকে সমৃদ্ধিশালী করে তুলবে। ১০ বছর ধরে সেই কাজ তাঁর সরকার ও বিজেপি করে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নিরাপদ, ভয়মুক্ত, সমৃদ্ধিশালী জম্মু–কাশ্মীর গড়ে তুলব। এটা মোদির গ্যারান্টি।’
এই নির্বাচনে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা একটা বড় বিষয় হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু–কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে গড়ে তোলা হয় দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। একটি জম্মু–কাশ্মীর, অন্যটি লাদাখ। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। যদিও সেই মর্যাদা দিতে সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ডোডার জনসভায় সেই প্রসঙ্গে মোদি বলেন, বিজেপির ওপর ভরসা রাখুন, কারণ একমাত্র বিজেপিই পারে জম্মু–কাশ্মীরকে রাজ্য হিসেবে গঠন করতে।
জম্মু–কাশ্মীর বিধানসভার মোট আসন ৯০। হিন্দুপ্রধান জম্মুতে রয়েছে ৪৩ আসন, মুসলমানপ্রধান উপত্যকায় ৪৭। বিজেপির মূল লক্ষ্য জম্মুর ১০ জেলা। উপত্যকার ১০ জেলায় তারা বাজি ধরেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর। এবারের ভোটে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ও জামায়াতে ইসলামির ‘সাবেক’ নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিজেপি তাঁদের মদদ দিচ্ছে। তা ছাড়া তাদের মদদে তৈরি দুই দল ‘আপনি পার্টি’ ও ‘আজাদ পার্টি’ও প্রার্থী দিয়েছে। এনসি–কংগ্রেস–সিপিএম লড়ছে জোটবদ্ধ হয়ে। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক হলেও পিডিপি লড়ছে একা।