চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখতে এবং রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা তাঁদের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। বলেছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করবেন।
এর আগে গত মাসে আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা তাঁদের কর্মবিরতি আংশিকভাবে প্রত্যাহার করেছিলেন।
আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নারী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে উত্তাপ এখনো কমেনি। গতকাল শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা আর জি কর হাসপাতাল থেকে একটি বিরাট মিছিল নিয়ে কলকাতার কেন্দ্রস্থল ধর্মতলার ডরিনা ক্রসিং এলাকায় আসেন। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে আসেন বিরাট একটি ঘড়ি। ঘড়িটি এনে তাঁরা লাগিয়ে দেন ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চে। ঘোষণা দেন, আর জি করে নারী চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান মঞ্চ থেকে তাঁরা তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
গত ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় এক নারী চিকিৎসক ধর্ষণের পর খুন হন। বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে আর জি করসহ রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল।
এই ধর্ষণ-খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা। শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, প্রতিবাদ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারতে।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের দাবি মেনে সিবিআই গ্রেপ্তার করে হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভিজিৎ মণ্ডলকে। বরখাস্ত করা হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে। এরপর সরকারের সঙ্গে চিকিৎসকদের দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠকের পর জুনিয়র চিকিৎসকেরা গত ২১ সেপ্টেম্বর কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহার করে কাজে ফেরেন। তবে বাকি দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ দফা দাবি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা। গতকাল রাতে ওই আংশিক কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।