বেঙ্গালুরুর ভোটারদের ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান
বেঙ্গালুরুর ভোটারদের ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান

বেঙ্গালুরুতে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নানা প্রণোদনা দিয়েও কাজ হয়নি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে গতকাল শুক্রবার ভোট হয়েছে। বেঙ্গালুরু শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে ভোট দেওয়া নিয়ে বরাবরই উৎসাহ-উদ্দীপনা কম দেখা যায়। এবার বেঙ্গালুরুর ভোটারদের ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। রাজ্যের নির্বাচন কমিশনও বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে তাতে কাজ হয়নি। গতকাল বেঙ্গালুরুর প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে যাননি।

গতকাল কর্ণাটকের ১৪টি আসনে ভোট হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুসারে রাজ্যে মোট ভোটার উপস্থিতির হার ৬৯ দশমিক ২৩। বেঙ্গালুরুর যে আসনগুলোয় ভোট হয়েছে, তার মধ্যে তিনটি শহুরে নির্বাচনী এলাকা। এগুলো হলো বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল, বেঙ্গালুরু নর্থ ও বেঙ্গালুরু সাউথ। তিনটি আসনেই ভোটার উপস্থিতি কম।

তবে গতকাল রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহরের যে তিন আসনে ভোট হয়েছে, সেখানে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫০ শতাংশের সামান্য বেশি। অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটারই ভোট দিতে যাননি। বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫২ দশমিক ৮১ শতাংশ, বেঙ্গালুরু নর্থে ৫৪ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং বেঙ্গালুরু সাউথে ৫৩ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালে ভোট পড়েছিল ৫৪ দশমিক ৩২ শতাংশ, বেঙ্গালুরু নর্থে ৫৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং বেঙ্গালুরু সাউথে ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।

বেঙ্গালুরুতে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাও হতাশ।

শীর্ষস্থানীয় এক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। এটাই বাস্তব।

ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার পেছনে গ্রীষ্মকালীন অত্যধিক গরমকে একটি কারণ বলে মনে করছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

অবশ্য বেঙ্গালুরুর গ্রামীণ নির্বাচনী আসনগুলোয় ভোটার উপস্থিতি ৬৭ দশমিক ২৯ শতাংশ ছিল।

কর্ণাটকের নির্বাচন কমিশন এবারের লোকসভা নির্বাচনে শহরের নির্বাচনী আসনগুলোয় ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিল। ভোটার স্লিপে কিউআর কোড ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্র শনাক্ত করার জন্য কয়েকটি অ্যাপ চালু করা হয়।

ভোটারদের জন্য ‘নো ইয়োর ক্যান্ডিডেট’ নামে একটি হেল্পলাইনও চালু করা হয়েছে। ভোট চলাকালে কেন্দ্রের সামনে লাইনে কতজন ভোটার দাঁড়িয়ে আছেন, তার হালনাগাদ তথ্যও উল্লেখ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশেষ করে বেঙ্গালুরুর ভোটকেন্দ্রে গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা কেমন, তা–ও উল্লেখ করা হয়েছে।

ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে গত বুধবার বিনা মূল্যে ও ছাড়কৃত মূল্যে খাবার দেওয়ার জন্য হোটেল পরিচালনাসংক্রান্ত একটি অ্যাসোসিয়েশনকে অনুমতি দেন কর্ণাটক হাইকোর্ট। তবে এতে নির্বাচনসংক্রান্ত নির্দেশনাগুলোর লঙ্ঘন যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়।

বুধবার আদালতের আদেশের পর বিভিন্ন কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন অফার ঘোষণা করতে থাকে। জনপ্রিয় বিনোদন পার্ক ওয়ান্ডারলা কর্তৃপক্ষ ভোটারদের ছাড়ে টিকিট দেওয়া ঘোষণা দেয়। শহরের ডেক অব ব্রুস পাব কর্তৃপক্ষ ভোট দিয়ে আসা প্রথম ৫০ জন গ্রাহককে বিনা মূল্যে বিয়ার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

রাইডশেয়ারিং অ্যাপ ব্লু স্মার্ট ভোটকেন্দ্রের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে ভ্রমণকারী যাত্রীদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়। অন্যদিকে ট্যাক্সি পরিচালকদের সংগঠন র‍্যাপিডো প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং বয়স্ক ভোটারদের বিনা মূল্যে ট্যাক্সিতে চড়ার সুযোগ দেয়।

ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে মি. ফিলিস রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ ভোট দিয়ে আসা প্রথম ১০০ গ্রাহককে নৈশভোজে বার্গার ও মিল্ক শেকে ৩০ শতাংশ মূল্যছাড় দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

তথ্যসূত্র: পিটিআই, বিবিসি