ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তবে এবার প্রকাশ্যে।
গতকাল শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে খাড়গে বলেন, ‘এনডিএ কোনোরকমে সরকার গড়েছে। ভুল করে। সরকার গড়ার জন–আদেশ নরেন্দ্র মোদি পাননি। তাঁর সরকার সংখ্যালঘু। যেকোনো সময়ে ওই সরকারের পতন ঘটতে পারে।’
কংগ্রেস সভাপতি সরকার পতনের এই সম্ভাবনার কথা প্রথম বলেছিলেন দিল্লিতে। ভোটের ফলাফল ঘোষণা পর ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে। তবে তাঁর সেই মন্তব্য প্রকাশ্যে ছিল না। শুক্রবারের মন্তব্য প্রকাশ্যে।
খাড়গে বলেন, ‘আমরা তো চাইব সরকারটা চলুক। দেশের জন্য সেটা ভালো। আমরাও চাই একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করতে। দেশকে মজবুত করতে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রীর অভ্যাসটাই এমন যে যা ঠিকঠাক চলে, তাকে চলতে দেন না। তবে আমাদের পক্ষ থেকে বলতে পারি, দেশকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করব।’
খাড়গের এই মন্তব্যের পিঠে প্রতিক্রিয়া জানাতে বিজেপি ও শরিকেরা দেরি করেনি। তামিলনাড়ুর বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই বলেছেন, ‘শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের গণতান্ত্রিক আগ্রহ দেখার পরও যদি তাঁর মনে হয় সরকারটা পড়ে যাবে, বেশি দিন টিকবে না। তা হলে বলব, উনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।’
এনডিএর শরিক দল বিহারের জেডিইউ নেতা নীরজ কুমার আবার খাড়গেকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর কংগ্রেসের হালও এমনই হয়েছিল। সে সময় নরসিংহ রাও সংখ্যালঘু সরকার গড়েছিলেন। চালিয়েও ছিলেন। তাঁর মন্তব্য, কংগ্রেস এখনো ৯৯-এর (কংগ্রেসের মোট আসন) চক্করে পড়ে রয়েছে। সেখান থেকে বেরুতে পারছে না।
বিহারের আরজেডি নেতা ইজাজ আহমেদ অবশ্য খাড়গেকে সমর্থন করে বলেছেন, ‘উনি ঠিকই বলেছেন। জন-আদেশ ওই সরকারের পক্ষে ছিল না। ভোটাররাও মোদিকে গ্রহণ করেননি।’
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর তৃণমূল কংগ্রেস চেয়েছিল কংগ্রেস সরকার গড়তে উদ্যোগী হোক। বিজেপিকে সরকার গড়তে দেওয়া ঠিক হবে না। কিন্তু সে সময় দেখা যায়, সরকার গড়তে বাড়তি যে সমর্থন দরকার, তা ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে চট করে জোটানো সম্ভব নয়। কংগ্রেস সভাপতি তখন উপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলেছিলেন।
সেই বৈঠকের পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় সাংসদদের এক সভায় বলেছিলেন, ‘আগামী দিনে ইন্ডিয়াই সরকার গড়বে। সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। দল পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলছে।’ এবার খাড়গের মন্তব্যেও পাওয়া গেল সেই প্রতীক্ষারই ইঙ্গিত।