আম আদমি পার্টি (আপ) ও বিজেপি কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতির জেরে শুক্রবার ভেস্তে গেল দিল্লি পৌরসভার মেয়র নির্বাচন। এই নির্বাচন কবে হবে, তার কোনো আভাস এই মুহূর্তে নেই।
গত মাসে দিল্লি পৌরসভার ভোটে আম আদমি পার্টি জয়ী হয়। ২৫০ ওয়ার্ডের মধ্যে আপ জিতেছিল ১৩৪টি, বিজেপি ১০৪। কংগ্রেস পায় ৯টি। স্বতন্ত্ররা ৩টি। ফল প্রকাশের পর বিজেপি জানিয়েছিল, তারা মেয়র ও উপ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না। পরে তারা সিদ্ধান্ত বদল করে ও প্রার্থীদের নাম জানিয়ে দেয়।
আজ শুক্রবার ছিল সেই নির্বাচন। কদিন ধরেই রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ছিল। দিল্লির উপরাজ্যপাল বিনয় কুমার সাকসেনা দুই দিন আগে প্রোটেম (অস্থায়ী) স্পিকার হিসেবে নিযুক্ত করেন বিজেপির সত্য শর্মাকে। অস্থায়ী স্পিকারের কাজ দুটি। কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করানো এবং স্থায়ী স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। আপ নেতৃত্ব উপরাজ্যপালের এই নিযুক্তিতে আপত্তি জানিয়ে বলে, গণতান্ত্রিক নিয়ম মেনে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকেই প্রোটেম স্পিকার করা হয়ে থাকে। উপরাজ্যপাল সেই বিধি ভেঙেছেন।
আজ গোলমালের শুরু সত্য শর্মা এক মনোনীত সদস্যকে (বিজেপির) শপথ গ্রহণের প্রথম সুযোগ দেওয়ায়। আপ সদস্যরা প্রতিরোধ নামেন। তাঁদের বাধা দিতে থাকেন বিজেপি সদস্যরা। শুরু হয় তুমুল তর্কাতর্কি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে উঠতে শুরু করে স্লোগান। ক্রমেই তা পরিণত হয় ঠেলাঠেলি ও হাতাহাতিতে। প্রবল হট্টগোলের মধ্যে প্রটোম স্পিকার সভার কাজ বন্ধ করে দেন। স্থগিত করে দেন মেয়র ও উপ মেয়র নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য।
পৌরসভার ২৫০ নির্বাচিত সদস্যের সঙ্গে দিল্লির মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন রাজ্যের ৭ লোকসভা (সবাই বিজেপির) ও ৩ রাজ্যসভা (সবাই আপ) সদস্য। তাঁরা ছাড়া নির্বাচনের ভোট দেওয়ার অধিকারী দিল্লি বিধানসভার (মোট সদস্য ৭০) স্পিকার মনোনীত এক-পঞ্চমাংশ (১৪ জন) বিধায়ক। এই বিধায়কদের মধ্যে আপের রয়েছেন ১৩ জন। সব মিলিয়ে মেয়র নির্বাচনে আপের পক্ষে মোট সদস্য ১৫০ জন, বিজেপির ১১২।
আপাতদৃষ্টিতে আম আদমির পক্ষে মেয়র ও উপ মেয়র পদে জয়লাভ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পৌরসভার আইন অনুযায়ী মেয়র নির্বাচনে দলত্যাগ বিরোধ আইন কার্যকর হয় না। দলের নির্দেশ অমান্য করলে কারও সদস্যপদও খারিজ হয় না। আপের অভিযোগ, বিজেপি টাকার জোরে কাউন্সিলর কিনে মেয়র পদ জিততে আগ্রহী। এইভাবে চণ্ডীগড়েও তারা মেয়র পদ জিতেছে। বিজেপির অভিযোগ, মেয়র পদে পরাজয় হবে বুঝেই আপ মনগড়া অভিযোগ এনে তা ভন্ডুল করে দিতে চেয়েছে।