কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্প্রতি যে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা নিয়ে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় চলছে, সেই হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর পরিবারকে তিনবার ফোন করা হয়েছিল বলে তিনটি অডিও ক্লিপ বের হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ এ নিয়ে প্রতিবেদন করলেও তারা এসব অডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে। হাসপাতাল থেকে করা ওই ফোনে জরুরিভাবে তাদের হাসপাতালে যেতে বলা হয়।
৯ আগস্ট আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ চলছে। দাবি তোলা হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের। এরই মধ্যে ফোনকলের রেকর্ডগুলো ফাঁসের ঘটনা নতুন করে সাড়া ফেলেছে।
আজ বৃহস্পতিবার এবিপি আনন্দের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ আগস্ট হাসপাতাল থেকে নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে তিনটি ফোন করা হয়। প্রথম ফোনকলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়—ওই চিকিৎসকের শরীর খারাপ। পরিবারের সদস্যদের দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। অসুস্থতার কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল থেকে বলা হয়, এ বিষয়ে চিকিৎসকেরা কথা বলবেন।
এরপর দ্বিতীয়বার হাসপাতালের সহকারী প্রধানের নামে ফোন করা হয়। সেবারও চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যদের দ্রুত হাসপাতালে যেতে বলা হয়। তৃতীয়বার ফোনকলে বলা হয়—ওই নারী চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, কী হয়েছে? জবাবে হাসপাতাল থেকে সেই একই কথা জানানো হয়—চিকিৎসকেরা বলবেন।
চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আজও কলকাতায় বিক্ষোভ হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে সকাল থেকে ধর্মতলার ডরিনা ক্রসিংয়ে সপ্তাহব্যাপী অবস্থান ধর্মঘটে বসেছে বিজেপি। সেখান থেকে মমতার পদত্যাগের দাবি তোলা হয়েছে।
এদিকে এ অবস্থান ধর্মঘটের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন সঞ্জয় দাস নামের এক আইনজীবী। হাইকোর্ট ওই আবেদনের শুনানির পর মামলাটি খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে মামলা করার জন্য আবেদনকারীকে ৫০ হাজার রুপি জরিমানা করেন।
চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতায় আজ বিকেলে মিছিল বের করে নাগরিক সমাজ। হেদুয়া থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলটি যায়। এ ছাড়া কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল করেছে কংগ্রেস। একই স্থানে মিছিল করেন কলকাতার তিনটি স্পোর্টস ক্লাব—ইস্ট বেঙ্গল, মোহনবাগান ও মোহামেডানের সমর্থকেরা।