কলকাতাসহ পুরো পশ্চিমবঙ্গের বইছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। এতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গরমের কারণে সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। কলকাতার রাস্তাঘাটে যানবাহনও কম।
গতকাল শনিবার কলকাতায় সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, আজ রোববার কলকাতায় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছুঁতে পারে। তাপপ্রবাহের কারণে আজ পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি জেলায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।
দিল্লির আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য বলছে, গতকাল গোটা ভারতে সর্বাধিক তাপমাত্রা ছিল ওডিশার বারিপদায়, ৪৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি বেশি। দ্বিতীয় স্থানে ছিল পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া। সেখানে ৪৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি বেশি।
তবে কলকাতার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বর্ধমানের পানাগড়ে, ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি বেশি।
আর গতকাল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আজও পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, কলাইকুন্ডা, পানাগড়, ব্যারাকপুরে তাপপ্রবাহ চলবে। গতকাল মেদিনীপুরে ৪৪ দশমিক ৫, বাঁকুড়ায় ৪৪ দশমিক ৬, বর্ধমানের পানাগড়ে ৪৫ দশমিক ১ এবং ব্যারাকপুরে সর্বাধিক তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর তথ্য বলছে, এর আগে কলকাতায় এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়েছিল ২০১৪, ২০১৬ ও ২০২৩ সালে। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিলে তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল বিকেলে কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর আভাস দিয়েছে, আজ এই রাজ্যের ৬টি জেলায় প্রচণ্ড দাবদাহ থাকবে। জেলাগুলো হলো পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম বর্ধমান। এই ছয় জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
এ ছাড়া আজ কলকাতা, হুগলী, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া ও পূর্ব বর্ধমানে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের আভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের এই ধারা চলবে।
এদিকে এই তীব্র দাবদাহে কলকাতাসহ রাজ্যের জেলা শহরগুলো কার্যত ফাঁকা হয়ে পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরাও বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। অনেক স্কুলে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস।